রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে আগুনের ঘটনা বেড়ে গেল। আমার মনে সন্দেহ হচ্ছে, এটাও নাশকতা কি না।’
‘যারা জীবন্ত মানুষকে গাড়িতে আগুন দিয়ে, বাসে আগুন দিয়ে, রিকশায় আগুন দিয়ে পোড়াতে পারে- এরা মানুষের ক্ষতি করাটাই জানে। ঈদের সময় মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করবে, হয়ত সেই পথটাও বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। আমার মনে হয়, এখানেও একটা ঘটনা আছে।’
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসে নিহত ব্যক্তিবর্গের পরিবারের সদস্য এবং আহতরা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যখন ভালো অবস্থার দিকে যাচ্ছে, আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছে; সেই সময়ে আবার অগ্নিসন্ত্রাস, মার্কেটে আগুন, নানাভাবে মানুষকে ক্ষতি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা যারা করছে তাদের প্রতি জাতির ঘৃণা। যারা এ অপরাধ করছে তাদের বিচার হবে।
এসময় তিনি বলেন, ‘একদিন শুনলাম আমার কেউ নেই। আমরা দুইটা বোন বিদেশে এতিম হয়ে গেলাম। কী বর্বরভাবে আমার মা, বাবা, তিন ভাইকে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ১৫ আগস্টের পর থেকে বার বার সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে তারা। আমি যখন বিরোধী দলে ছিলাম এমন দিন ছিল না যে লাশ টানতে হয়নি? এরপরও কী করে মানুষ তাদের পাশে থাকে এটা আমি বুঝে উঠতে পারি না।
সরকারপ্রধান বলেন, দিনের পর দিন ফাঁসির যে কাহিনী, এগুলো আমরা বিদেশে থেকেই শুনতাম। যেখানে কেন্দ্রীয় কারাগার নেতাদের হত্যা করা হলো। কোনও অপরাধ নেই, জানেও না তাদের কী অপরাধ ছিল। ধরে নিয়ে ফাঁসি দেওয়া হয়। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যেভাবে বর্বরতা করেছিল, বিএনপি-জামায়াতও সেই একইভাবে বর্বরতা করেছে। জিয়াউর রহমান তো হাসতে হাসতে মানুষের ফাঁসির রায় লিখত। কোনও বিচার ছিল না। ফাঁসির রায় দেওয়া হয়ে গেছে, আর বিচার হয়েছে পরে। কী জুলুম, কী অত্যাচার, কী অন্যায়। ৩৫ বছর লেগেছে আমার বাবা-মার হত্যার বিচার করতে।
তিনি বলেন, অনেক বিচারক বিব্রতবোধ করে রায় দিতেন। যেখানে এতগুলো মানুষ হত্যা করল সেখানে বিচারকরাও রায় দিতে লজ্জাবোধ করেন, এটাও আমাকে দেখতে হয়েছে। এজন্য আমি আপনাদের কষ্ট বুঝি, কারণ আমিও একই রকম কষ্ট পেয়েছি।