দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথমবারের মতো মেরিন ইউনিট চালু করেছে জাপান। বলা হচ্ছে, চীনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জোরালো করাই এর উদ্দেশ্য।
মেরিন ইউনিট চালু উপলক্ষে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের চুশু দ্বীপের সাসোবোর কাছাকাছি অবস্থিত সামরিক ঘাঁটিতে গতকাল শনিবার হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এতে অ্যাম্ফিবিয়াস র্যাপিড ডেপ্লয়মেন্ট ব্রিগেডের প্রায় দেড় হাজার সদস্য অংশ নেন। মেরিন সেনাদের ওই দলকে পূর্ব চীন সাগরে থাকা দ্বীপগুলোতে চীনা আগ্রাসন মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ‘জাপানিজ গ্রাউন্ড সেল্ফ ডিফেন্স ফোর্সের’ ‘অ্যাম্ফিবিয়াস র্যাপিড ডেপ্লয়মেন্ট ব্রিগেডই’ (এআরডিবি) হচ্ছে জাপানের মেরিন সেনাদের দল।
মেরিন সেনাদের এই নতুন ব্রিগেড জাপানের বাড়াতে থাকা নৌ-সক্ষমতার প্রতীক। মেরিন ইউনিটে হেলিকপ্টার ক্যারিয়ার, জলে ও স্থলে চলতে সক্ষম যানসহ নানা কিছু রয়েছে।
জাপানের সহকারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী তোমোহিরো ইয়ামামতো বলেন, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাপানের চারপাশের পরিবেশ প্রতিকূল। এ অবস্থায় দ্বীপগুলোর প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আর তাই দ্বীপগুলোকে আক্রমণের হাত থেকে বাঁচানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
মেরিন বাহিনীর উপস্থিত সদস্যরা কিছু সময়ের জন্য সামরিক কৌশল প্রদর্শন করেন। তাঁরা একটি দূরবর্তী দ্বীপ পুনর্দখলে নেওয়ার মহড়াও দেন উপস্থিত দর্শকদের সামনে। সমালোচকেরা বলছেন, মেরিন ব্রিগেড গঠন করা বিতর্কিত এক সিদ্ধান্ত। কারণ, এই ইউনিটের বৈশিষ্ট্য সেনাবাহিনীর মতোই। এই বাহিনী জাপানের প্রতিবেশীদের হুমকি-ধমকিতে প্রয়োগ হতে পারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে জাপানের গঠিত সংবিধানে বলা হয়েছিল যে তারা আর যুদ্ধে জড়াবে না।
রয়টার্স মনে করে, ২ হাজার ১০০ সদস্যের মেরিন ব্রিগেড বানিয়ে ফেলা জাপান এখন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন এক্সপেডিশিওনারি ইউনিটের (এমইইউ) মতো কিছু বানাবে। এই রকম দলের সদস্যদের যে প্রশিক্ষণ থাকে, তাতে তারা দেশ থেকে দূরে গভীর সমুদ্রেও অভিযান চালাতে পারে।
জাপান ফোরাম ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের রিসার্চ ফেলো গ্রান্ট নিউশাম বলেন, জাপান চাইলে এক কিংবা দেড় বছরের মধ্যে এই সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে। নিউশাম এ-ও বলেন যে সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করার জন্য জাপানের এখন দরকার নৌ-সেনার যৌথ একটি দপ্তর।
বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে সাম্প্রতিক সময়ে প্রভাব বাড়িয়েছে চীন। ওই সাগরে টোকিওর নিয়ন্ত্রণে থাকা জনশূন্য অনেকগুলো দ্বীপের মালিকানা দাবি করে বেইজিং। ২০১৮ সালে সশস্ত্র বাহিনীতে ১৭ হাজার ৬৫৬ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে চীন, যা জাপানের বিনিয়োগের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি।