রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে বুধবার (২ মার্চ) ৪২ বছর বয়সী এক হার্ট ফেইল নারীর দেহে মেকানিক্যাল হার্ট স্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কারো দেহে মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্ট সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেন হাসপাতালের চিফ কার্ডিয়াক সার্জন ও কার্ডিয়াক সেন্টারের পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর কবির। তার নেতৃত্বে একটি দল কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন।
বর্তমানে ওই নারী সুস্থ রয়েছেন বলে জানান চিকিৎসকরা। তবে রোগীর নাম বা পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বিকেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওই রোগীর সার্জারি, বর্তমান অবস্থাসহ বিস্তারিত তুলে ধরেন ইউনাইটেড হাসপাতালের চিফ কার্ডিয়াক সার্জন ও কার্ডিয়াক সেন্টারের পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর কবির।
তিনি জানান, ওই নারী দীর্ঘদিন তীব্র হার্ট ফেইলিওরসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। দেশে বিদেশে নানা চিকিৎসার পরও তার হৃদপিণ্ড প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। এই অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে গতকাল (২ মার্চ) প্রায় ৪ ঘণ্টা সময় নিয়ে সফল অস্ত্রপচারের মাধ্যমে হার্টমেট-৩ নামের মেকানিক্যাল হার্ট রোগীর বাম নিলয়ে স্থাপন করা হয়। এতে তার হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়। এর ফলে রোগীর মৃত্যুঝুঁকি কমার পাশাপাশি হার্ট ফেইলিওরের লক্ষণের উন্নতি ঘটবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘এটি একটি ব্যয়বহুল ডিভাইস। হার্ট ফেইলিওর যে কোনো রোগীর দেহে এটি স্থাপন করা সম্ভব। এটার জন্য একজন রোগীকে অন্তত ১০ থেকে ১৫ দিন হাসপাতালে থাকতে হবে। ডিভাইসটি আমেরিকায় তৈরি। এর দাম পড়বে এক কোটি টাকার মতো। হাসপাতালের খরচসহ সবমিলিয়ে আনুমানিক সোয়া কোটি টাকা খরচ হবে বলেও জানান এই চিকিৎসক।’
তবে, আগামীতে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের দেহে এই ডিভাইস স্থাপন শুরু হলে এর খরচ আরও কমে যাবে বলেও জানান তিনি।
এই ডিভাইস শরীরে স্থাপন করার পর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে রোগী কথা বলা, নিজ মুখে খেতে পারবেন। জীবনে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলার পাশাপাশি নিয়মিত ওষুধ খেলে এ ধরনের রোগীরা ১৫ থেকে ২০ বছর নিরাপদ জীবন যাপন করতে পারবেন বলেও জানান কার্ডিয়াক সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর কবির।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেবল সাঁতার কাটা ছাড়া সব ধরনের স্বাভাবিক কাজ করতে পারবেন এসব রোগীরা।’