শনিবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত ৪৩৬ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৩২৬ জন হয়েছে।
আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ২২ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৩৩৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯৯ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বাধিক মৃত্যু।
প্রথম মৃত্যুর প্রায় চার মাস পর মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়ায়, সংখ্যাটি আরও ১ হাজার বাড়ে এক মাসেরও কম সময়ে। গত ৫ জুলাই মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছিল।
তার ২৩ দিনের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ছাড়ায় ৩ হাজার। আরও এক হাজার বাড়তেও সময় লেগেছিল এক মাসের কম। ২৫ অগাস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়েছিল।
তারপর ৫ হাজার ছাড়িয়েছিল ২২ সেপ্টেম্বর। অর্থাৎ আরও এক হাজার বাড়তেও এক মাস লাগেনি।
তবে এরপর মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে ধীর গতিতে। ৪ নভেম্বর মৃত্যুর সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছিল। তার আরও ৩৮ দিন পর ৭ হাজার ছাড়ায়। মৃতের তালিকায় সর্বশেষ ১ হাজার যোগ হতে সময় লাগল ৪২ দিন।
জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে বিশ্বে মৃত্যুর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩৮তম। আর আক্রান্তের সংখ্যা বিচারে বাংলাদেশ রয়েছে ৩০তম স্থানে।
২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গত এপ্রিলের পর শনিবারই প্রথম পাঁচশর নিচে নামল।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ; এর পর গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বাধিক শনাক্ত।
শনিবারের আগে এক দিনে সবচেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত বছরের ২৬ এপ্রিল; সেদিন ৪১৮ জন রোগী শনাক্তের খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরদিন রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৪৯৭ জন। তারপর থেকে শনিবারের আগে শনাক্তের সংখ্যা একদিনও পাঁচশর নিচে নামেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৬টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৮টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৫৬টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাব মিলিয়ে সর্বমোট ২০০টি ল্যাবে ১১ হাজার ১১৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩৫ লাখ ৪১ হাজার ৩৮৯টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ, নারী ৫ জন। তাদের প্রত্যেকেই হাসপাতালে মারা গেছেন।
মৃতদের মধ্যে ১৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিলো।
মৃতদের মধ্যে ১৮ জন ঢাকা বিভাগের, ৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৩ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৬৪ জনই পুরুষ এবং ১ হাজার ৯৩৯ জন নারী।
তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৪১৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ১২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯১৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৯৮ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৬৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৬ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
মৃতদের মধ্যে ৪ হাজার ৪৫২ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৪৬৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৫৬ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৪৫ জন খুলনা বিভাগের, ২৪১ জন বরিশাল বিভাগের, ৩০১ জন সিলেট বিভাগের, ৩৫৫ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৮৭ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।