নতুন ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির মধ্যে দ্বিতীয় বাজেট এটি। ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার এ বাজেটে করোনা মোকাবিলাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে, প্রাধান্য দেয়া হয়েছে মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষা কার্যক্রমকে। আকারের দিক থেকে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাজেট এটি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দুপুর ৩টায় এ বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয় মেয়াদের সরকারে তৃতীয়বারের মতো বাজেট পেশ করছেন মুস্তফা কামাল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাজেট বক্তব্য শুরু করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯-এর দীর্ঘতর প্রভাব এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতি ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। কোভিড-১৯ এর প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে সৃষ্ট ক্ষতি হতে পুনরুদ্ধারের কৌশল বিবেচনায় নিয়ে এবং বিশেষভাবে স্বাস্থ্য খাতে উদ্ভূত প্রয়ােজন মেটানাে এবং ভ্যাকসিন প্রয়ােগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে। কোভিড-১৯ এর প্রভাব মােকাবিলায় প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ব্যবস্থা প্রস্তাবিত বাজেটে রাখা হয়েছে।
এর আগে, দুপুরে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়। দুপুর ১২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের পশ্চিম ব্লকের দ্বিতীয় তলায় মন্ত্রিসভা কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এ বিশেষ বৈঠক হয়। নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাজেট অনুমোদন দিয়ে স্বাক্ষর করেন।
পরে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে খয়েরি ব্রিফকেস হাতে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংসদ কক্ষে প্রবেশ করেন অর্থমন্ত্রী। এই ব্রিফকেসেই ছিল ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট।
‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামে এবারের বাজেটটি প্রস্তুত করা হয়েছে। করোনার কারণে কমসংখ্যক সংসদ সদস্যের (এমপি) উপস্থিতিতে দেশের ৫০তম বাজেট ঘোষণা করা হচ্ছে। যারা উপস্থিত রয়েছেন তাদের আসতে হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
এর আগে, গতকাল বুধবার (২ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের অধিবেশন কক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন বসে। গত বছরের মতো এবারের অধিবেশনও সংক্ষিপ্ত হবে।
এবারের বাজেটে প্রাধিকার পেয়েছে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে সরকারের অতীতের অর্জন এবং উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয়ে। সঙ্গত কারণেই বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য খাতে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজসমূহের বাস্তবায়ন, কৃষিখাত, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অর্থবছরের পুরো সময় জুড়েই থাকবে সরকারের নানা ধরনের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, বাড়ানো হবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা।