দেশের যেসব স্থানে ঈদ উদযাপন হচ্ছে আজ

:
: ৩ মাস আগে

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। তবে দেশের অনেক এলাকায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিল রেখে আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদ উদযাপন করছেন অনেকে।

মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের পাঁচ উপজেলার অর্ধশত গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে মানুষ। বুধবার ওই সব গ্রামের মুসল্লিরা নানা প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ঈদের নামাজ আদায় করেন। হাজীগঞ্জের পীরের অনুসারী হিসেবে ১৯২৮ সাল থেকে তার পরিবারের সদস্যরা নির্ধারিত তারিখের একদিন আগেই ঈদ উদযাপন করেন।

মূলত বিশ্বের যেকোনো স্থানে চাঁদ দেখা যাওয়ার ভিত্তিতে চাঁদপুরের অর্ধশত গ্রামে ঈদ উদযাপিত হয়ে থাকে।

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলাতেও প্রায় ১৩ গ্রামে ঈদ উদযাপন হচ্ছে আজ বুধবার। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদ উদযাপন করেন তারা। একদিন আগে যারা রোজা ও ঈদ উদযাপন করেন তারা সবাই চট্টগ্রামের মির্জাখিল শরীফের মুরিদান। বুধবার সকাল আটটার দিকে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়।

চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের রাধানগর ও ৭৬ বিঘিসহ কয়েকটি গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে আজ। সকাল সাড়ে সাতটার সময় ৭৬ বিঘি আম বাগানে ঈদুল ফিতরের নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা মোজাম্মেল হক। নামাজ শেষে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন তারা।

বরিশাল নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আগাম ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন আজ। বরিশাল জেলার প্রায় অর্ধশত মসজিদে সকাল ৯টায় প্রথম ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

 

আজ যারা ঈদ পালন করছেন তারা চট্টগ্রামের চন্দনাইশের জাহাগীরিয়া শাহসুফী মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারী ভক্তগণ।

 

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার একটি গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপন হচ্ছে আজ। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ৭টায় উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের কলাদিয়া উত্তরপাড়া আবু বক্কর সিদ্দিক (রা.) জামে মসজিদে এই ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন ঈদের জামাতের মাওলানা আব্দুল্লাহ মাসুম।

 

একদিন আগে ঈদ উদযাপন করছেন লক্ষ্মীপুরের ১১ গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১০টায় রামগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব নোয়াগাঁও তালিমুল কুরআন নূরানী মাদরাসা ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন শতাধিক মুসল্লি। এ উপজেলার ৪টি ও রায়পুর উপজেলার একটি মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তবে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে নয়, হানাফি মাজহাব অনুসারে ঈদ পালন করছেন বলে জানিয়েছেন ইমাম ও মুসল্লিরা।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে কয়েকটি গ্রামের শতাধিক পরিবার বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মুন্সিপাড়ায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার, সুন্দ্রহবী, কাকিনা, চাপারহাট, চন্দ্রপুর, আমিনগঞ্জ ও মুন্সীপাড়া গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা ও ঈদ করেন এসব গ্রামের মুসল্লিরা।

বাগেরহাটের মোংলাতেও ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে আজ। উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের দুয়ারীজারা গ্রামের চটেরহাট জামে মসজিদে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয় ঈদের জামাত। এতে ঈমামতি করেন খতিব বেল্লাল সরাদর। এ সময় একসাথে প্রায় ১০ গ্রামের নারী-পুরুষ ঈদের নামাজ আদায় করেন। পরে মসজিদ কমিটির সভাপতি এম নুরুল আমিন সেমাই দিয়ে সকলকে আপ্পায়ন করেন।

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের ডহরশংকর গ্রামের (নাপিতের হাট বাজার) এলাকায় বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শরীয়তপুরে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে অন্তত ৩০টি গ্রামের সুরেশ্বরীর (রহ.) ভক্ত-অনুসারীরা ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১০টায় নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর দরবার শরিফের মাঠে হাজারো মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন।

 

জানা যায়, অন্তত শত বছর আগে থেকে জান শরিফ শাহ সুরেশ্বরী নামে এক সুফি সাধকের ভক্ত ও অনুরাগীরা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে রোজা ও ঈদ পালন করে আসছেন। জেলায় সুরেশ্বর, কেদারপুর, চাকধ, দক্ষিণ দারাগড়সহ অন্তত ৩০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ জান শরীফ শাহ সুরেশ্বরীর অনুসারী। বুধবার সকালে সুরেশ্বর দরবার শরীফের মাঠে হাজারো মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন।

মাদারীপুরের প্রায় ৩০ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। এদিন সকালে জেলার সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিনের তাল্লুক গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। সেখানে সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদের প্রধান জামাত পড়ান তাল্লুক গ্রামের মৌলভী বাড়ির মসজিদের ইমাম মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান।

ভোলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়েছেন আজ। জেলার বিভিন্ন গ্রামের সুরেশ্বরী দরবার শরিফ ও সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরিফ অনুসারীরা এ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন।

দিনাজপুরের ৬ উপজেলার অন্তত ৫০ স্থানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে বুধবার। সকাল পৌনে ৮টায় দিনাজপুর শহরের চারুবাবুর মোড়ের পার্টি সেন্টারে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে নারী পুরুষসহ দুই শতাধিক মুসল্লি অংশ গ্রহণ করেন।

একইসঙ্গে চিরিরবন্দর উপজলার রাবার ড্যাম এলাকা, কাহারোল উপজেলা জয়নন্দ গ্রাম, ১৩ মাইল এলাকা, বিরামপুর উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের আয়রা বাজার জামে মসজিদ, জোতবানী ইউনিয়নের খয়েরবাড়ি মির্জাপুর জামে মসজিদ এবং বিরল উপজেলার বালান্দোর ও ভাড়াডাঙ্গী এবং বোচাগঞ্জ উপজেলার তেতরা গ্রামে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।