দেশের মানুষের কষ্ট উপলব্ধি না করে মন্ত্রীরা জনগণের সাথে উপহাস করছে -মাওলানা গাজী আতাউর রহমান

:
: ৪ মাস আগে

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, দেশের মানুষ কতটা কষ্টের মধ্যে আছে তা উপলব্ধি করে না সরকারের মন্ত্রীরা জনগণের জীবনযাপন ও খাবার নিয়ে উপহাস করে বক্তব্য দিচ্ছে। ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে তারা বলে ইফতারিতে খেজুর বাদ দিয়ে বরই খাবেন, কাঁঠাল দিয়ে বার্গার বানিয়ে খাবেন। জনগণের সাথে ঠাট্টা, মশকরা ও উপহাস করা বন্ধ করুন। লজ্জা থাকলে অবিলম্বে এসব অর্বাচীন মন্ত্রিদের জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করা উচিৎ।
আজ শুক্রবার (৮ মার্চ) পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে বেলা ৩টায় ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত নবাগত সদস্য সম্মেলনে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ-এর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ আল-আমিন সোহাগের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ ওয়ালিউল্লাহ তালুকদারের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে জনগণ দিশেহারা। দেশের মানুষ আজ বড় অসহায়। পৃথিবীর মুসলিম রাষ্ট্র গুলোতে রমজানে সবকিছুর দাম কমিয়ে দেওয়া হয় অথচ বাংলাদেশে তার পুরোই উল্টো চিত্র দেখায় যায়। এখন মৌসুমের সময়ে পেঁয়াজ ১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে, ২০ টাকার আলু ৫০ টাকা দিয়ে কিনতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে অসহায় দরিদ্র মানুষ কি দিয়ে ইফতার করবে, কি দিয়ে সেহরি করবে এ নিয়ে বিপাকে আছে। এরমধ্যে আবার শুরু হয়েছে আগুনের ভয়াবহতা। এতদিন অগ্নিকান্ড বন্ধ থাকলেও রমজানকে সামনে রেখে একের পর এক রেস্তোঁরা, চিনির গোডাউন, বিভিন্ন ভবন আগুনে পুড়ে যাচ্ছে। এসবের পিছনে কোনো রহস্য ও ষড়যন্ত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। আমাদের দেশে এমন চরিত্রের লোক শাসন ক্ষমতায় বসে রয়েছে যারা জনগণের রক্ত চুষে নেওয়ার জন্য সদা তৎপর। তারা রমজানে মানুষকে আরও কিভাবে শোষন করা যায় সেই পায়তারা করছে।
প্রধান অতিথি বলেন, রমজানের শুরুতেই খাদ্য সামগ্রীর দাম কমিয়ে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকারের আরও তৎপর হওয়া উচিৎ ছিলো অথচ সরকার জনগণের কথা চিন্তা না করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতেই ব্যস্ত রয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একটি আদর্শবাদী, মানবতাবাদী, গণমুখী ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দেশের মানুষের জন্য কাজ সংগ্রাম করে যাচ্ছে। সমাজের বঞ্চিত, অবহেলিত ও অসহায় মানুষের কষ্ট লাঘবে নিজেদের সামর্থ্যের আলোকে সহযোগিতা ও সেবা কার্যক্রম নিয়ে তাদের পাশে আছে ও থাকবে। যা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করছে এবং স্বীকৃতি দিতেও বাধ্য হচ্ছে। তিনি সমাজের বিত্তশালী ও সামর্থ্যবানদের সমাজের এসব অসহায় মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা মুফতী মানসুর আহমদ সাকী বলেন, ইসলাম হচ্ছে একটি শান্তিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা যেখানে হিংসা, বিদ্বেষ থাকবেনা। ইসলামে গুম খুন, ধর্ষন, লুটতরাজ, রাহাজানি পছন্দ করেনা। উন্নত সমাজ ব্যাবস্থার জন্য প্রশিক্ষিত কর্মী বাহিনীর বিকল্প নেই। ব্যর্থ জাহেলী সমাজ ব্যবস্থার মূলোৎপাটন করে ইসলামী শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা কায়েমে যুব সমাজকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সবসময় সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেকে যোগ্য ও দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কুরআন ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা ছাড়া সত্যিকারের শান্তি সম্ভব না। বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকৌশল নির্ধারণ করে মতপার্থক্য সত্ত্বেও প্রশিক্ষিত যুবসমাজের সার্বজনীন ঐক্য এখন সময়ের দাবি।
নবাগত সদস্য সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় উপ-সম্পাদক কে এম শামিম আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক এইচ এম রফিকুল ইসলাম।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সহ-সভাপতি মুফতী শওকত উসমান, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম নাসির উদ্দিন, দফতর সম্পাদক মুহাম্মাদ তসলিম উদ্দিন রুবেল, অর্থ সম্পাদক মুহাম্মাদ শাহ পরান, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মুহাম্মাদ কাউসার আহমেদ, শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক হাফেজ ক্বারী মাওলানা মুহাম্মাদ মাহমুদুল হাসান, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এইচ এম গোলাম রাব্বি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ আবুল কাশেম, উপ-সম্পাদক আব্দুল্লাহ সা’দ, মুহাম্মাদ আব্দুল গফুর প্রমূখ।