বরগুনা সদরে অবস্থিত আব্দুল্লাহ ইবন উম্মে মাকতুম (রহ.) ব্রেইল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন জন্মান্ধ হাফেজ ও ক্বারি মাহমুদুর রহমান মিরাজ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ঝালকাঠিতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ দুর্ঘটনায় ভুক্তভোগীদের একজন তিনি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে জীবন রক্ষা করলেও ওই দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন বাবাকে।
সংগ্রামী জীবনে থেমে থাকার পাত্র নন হাফেজ মিরাজ। নিজের মাদ্রাসার অন্ধ শিক্ষার্থীদের শুধু ইসলামী এবং চলমান শিক্ষায় শিক্ষিত করেই ছেড়ে দিতে চান না তিনি; তারা যেন প্রযুক্তিতেও দক্ষ হয়ে ওঠে, সে চেষ্টাও করছেন। এজন্য মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার ব্যবহার শেখানোর জন্য একটি পুরনো ল্যাপটপ কিনেছিলেন। কিন্তু ল্যাপটপটি বেশিদিন ব্যবহার করতে পারেননি। তাই, প্রয়োজন হয় আরেকটি ল্যাপটপের। কিন্তু আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় সাহায্যের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে মানবকল্যাণী ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এভাবে মাহমুদুর রহমান মিরাজের যোগাযোগ হয় সাঈদ রিমনের সঙ্গে, যিনি ‘সচেতনতার ফেরিওয়ালা’ ট্যাগলাইনে ফেসবুকে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালান। হাফেজ মিরাজের মাদ্রাসার জন্য ল্যাপটপ চেয়ে সাঈদ রিমন ১৮ ফেব্রুয়ারি নিজ ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি পোস্ট দেন। পোস্টটি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকের দৃষ্টিগোচর হয়। একপর্যায়ে তা চোখে পড়ে দেশীয় প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের। ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে সাঈদ রিমনের সঙ্গে যোগাযোগ করে খোঁজ মেলে হাফেজ মিরাজের। অতঃপর ২৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকেলে তাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয় ঢাকায় ওয়ালটন গ্রুপের করপোরেট অফিসে। সে সময় হাফেজ মিরাজকে ব্রেইল পদ্ধতির মাদ্রাসার জন্য একটি ওয়ালটন ল্যাপটপ উপহার দেয় কর্তৃপক্ষ।
ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পক্ষ থেকে ল্যাপটপটি হাফেজ মিরাজকে হস্তান্তর করেন ওয়ালটন কম্পিউটার বিভাগের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান রাদ। ল্যাপটপ প্রদান অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক আজিজুল হাকিম ও জিনাত আরা রহমান। অনুষ্ঠানে সাঈদ রিমন এবং হাফেজ মিরাজের মাদ্রাসার একজন শিক্ষার্থীসহ আরও উপস্থিত ছিলেন—ওয়ালটনের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর পলাশ আহমেদ, ব্র্যান্ড ইনচার্জ তানভির আহমেদ রাজিব, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর তানজিমুল হক তন্ময় প্রমুখ।
ল্যাপটপ পেয়ে ওয়ালটনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন হাফেজ মিরাজ। তিনি বলেন, ‘ওয়ালটন আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসায় তাদের ধন্যবাদ। আমি তাদের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি। ওয়ালটন এভাবে যেন আরও মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে।’
ওয়ালটন কম্পিউটার বিভাগের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান রাদ বলেন, ‘দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশীদার হতে পারে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবার দৃষ্টিগোচর করার জন্য সাঈদ রিমনকে ধন্যবাদ।’
উল্লেখ্য, বরগুনার সদরে অবস্থিত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রহ.) ব্রেইল মাদ্রাসা এবং এতিমখানায় বর্তমানে আটজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী পড়ছে। সেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন তিনজন। প্রতিষ্ঠানটির আরও উন্নতি এবং সম্প্রসারণের জন্য ভবিষ্যতে পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছে ব্যক্ত করেছেন ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com