দুর্ঘটনায় আইসিইউতে পাত্রী, সেখানেই হলো বিয়ে

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

গয়নার বাক্স খুলে আংটিটা নয় বছরের প্রেমিকা সঙ্গীতা বড়োর হাতের আঙুলে পরিয়ে দিলেন প্রেমিক হিমাংশু পঙ্কজ বড়ো। সঙ্গীতার চোখ থেকে ঝরল অশ্রু। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আইসিইউতেও প্রেমিক-প্রেমিকার মনে প্রেমের উষ্ণতা।গত রোববার এই দৃশ্যের সাক্ষী হলো ভারতের গুয়াহাটির অ্যাপোলো হাসপাতালের আইসিইউ।

আইসিইউতে আংটি বদল। তাই হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও পাশের বেডের রোগীরা সন্ধ্যায় ভিজিটিং আওয়ার্সের অপেক্ষায় ছিলেন।হিমাংশু ও সঙ্গীতার প্রেমের শুরু কে সি দাস কমার্স কলেজে পড়ার সময় থেকে। ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তাদের। সঙ্গীতা এখন এমকম করছেন। হিমাংশু কাজ করেন একটি নির্মাণ সংস্থায়।গত রোববার ছিল হিমাংশু-সঙ্গীতার আংটি বদল এবং আশীর্বাদের তারিখ। তাই গত ৮ অক্টোবর বিয়ের প্রস্তুতির জন্যই গাড়ি ভাড়া করে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন সঙ্গীতা।

কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তার বাবা ও গাড়িচালক মারা যান।গুরুতর জখম ও অজ্ঞান অবস্থায় সঙ্গীতাকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। কিন্তু বাবার মৃত্যুর ধাক্কা, ভাঙা হিপ জয়েন্ট-হাত-শিরদাঁড়া, ফুসফুসের সংক্রমণ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়া সঙ্গীতা নিজেও বাঁচার আশা হারিয়ে ফেলেন। গত শনিবার সঙ্গীতার জ্ঞান ফেরে।পরের দিন সকালে সঙ্গীতা হঠাৎ জানান, ওই দিনই তিনি হিমাংশুর হাতে আংটি-সিঁদুর পরতে চান।

দুই পরিবার ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন, যেভাবেই হোক সঙ্গীতাকে খুশি করতে হবে। নিয়ম খানিকটা ভেঙে আইসিইউতে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।সঙ্গীতার ইচ্ছামতো তাকে আংটি পরিয়ে দেন হিমাংশু। গায়ে তুলে দেন নতুন শাড়ি। হবু বউমাকে আশীর্বাদ করেন হিমাংশুর বাবা-মা। সঙ্গীতার কপাল ও সিঁথিতে সিঁদুর লাগিয়ে দেন হিমাংশু। তার পরনে ছিল নতুন পাঞ্জাবি।আশীর্বাদের পরে নার্স, ডাক্তার, অন্য রোগী ও তাঁদের পরিবারসহ সবাইকে মিষ্টিমুখ করায় হিমাংশুর পরিবার।হিমাংশু বলেন, এখন সঙ্গীতাকে বিপদমুক্ত করা এবং তার মনের জোর ফিরিয়ে আনাই আমার প্রধান লক্ষ্য। আংটি বদল, সিঁদুর পরানো ও আশীর্বাদ ওর বাঁচার আশা অনেকটাই বাড়িয়েছে। আমরা আরো ভাগ্যবান কারণ অন্যরাও প্রাণ খুলে আমাদের আশীর্বাদ করেছেন।