দুর্ঘটনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মৃত্যু : মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

:
: ২ years ago

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরে ভাঙ্গার মাধবপুরে নিয়ন্ত্রণ হারানো বাসের ধাক্কায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম ইসমাঈল ইমন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

নিহতের সহপাঠীরা জানান, শনিবার রাতে ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে আসছিলেন ইমন। পথে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের ভাঙ্গার মাধবপুর নামক স্থানে সাকুরা পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হলে পরবর্তীতে তাকে ঢাকার কল্যাণপুর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসটাতালে ভর্তি করা হয়।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় ওই হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইমন।

তার মৃত্যুর খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সড়কের দুই পাশে শত শত পরিবহন আটকা পরে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের যাত্রীরা। বিকল্প পথ না থাকায় অনেক যাত্রী বাস থেকে নেমে কয়েক কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, পটুয়াখালী-বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী সাকুরা পরিবহনের বাস বেপরোয়া গতির কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়। কিন্তু আইনগত কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে তারা প্রতিবারই পার পেয়ে যায়। এ অবস্থায় আমরা ঘাতক চালকসহ পরিবহনের সংশ্লিষ্ট যাদের গাফিলতি রয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

শিক্ষার্থীরা ইমনের মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচ দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

তারা তাদের দাবি তুলে ধরে বলেন, সাকুরা বাস কতৃপক্ষকে কোটি টাকা ক্ষতিপুরণ দিতে হবে, চিকিৎসার গাফলতির কারণ তদন্ত করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে হবে, সাকুরা বাসের রুট পারমিট সাময়িকভাবে বাতিল করতে হবে, প্রত্যেক বাসকে জি.পি.এস ট্র্যাকিংয়ের আওতায় এনে অতিরিক্ত গতির জন্য স্বয়ংক্রিয় জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে, স্পিড লক ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।

এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা তাসনিম জাহান বলেন, ঘটানা জানার পরপরই আমি ব্যক্তিগতভাবে খোঁজ নিয়েছি। গত রাতে তাকে আইসিইউতে ট্রান্সফার করা হয়েছিল। রাতে অপারেশনের কথা ছিল। সকালে ফোন দিয়েছিলাম, রিসিভ করেনি।

এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান বঙ্কিম চন্দ্র সরকার বলেন, বিশ্বাস করা কঠিন যে আমাদের ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইসমাইল ইমন আর নেই। মার্কেটিং বিভাগের জন্য এটি সবচেয়ে দুঃখজনক মুহূর্ত। তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।

বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।