দুর্নীতি রোধে সরাসরি অভিযোগ জানাতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হট লাইনে। প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ১০ হাজারেও বেশি ফোন আসছে হট লাইনে।
তবে জনবল সংকটে সব কল রিসিভ করতে পারছে না দুদক। কিন্তু মানুষের দুর্নীতি বিরোধী এ মনভাবকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এ জন্য ছুটির দিনসহ অন্যান্য দিনে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর চিন্তা করছে দুদক।বৃহস্পতিবার দুদক থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
দুদকের হটলাইনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা জাগো নিউজকে জানান, ১৬৮ অভিযোগ তফসিলভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাইসহ পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কল সেন্টারের দায়িত্বে থাকা সেলিনা আক্তার মনি বলেন, গত কয়েক দিনে হটলাইনে ভূমি-সংক্রান্ত অভিযোগ এসেছে সব চেয়ে বেশি। এছাড়া নারী নির্যাতন ও মাদক-সংক্রান্ত অভিযোগও এসেছে। তবে বেশির ভাগ অভিযোগ তফসিলভুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সেসব অভিযোগের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সমাধানের উপায় বালে দিচ্ছেন দুদকের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, গত শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় ওই দুদিন দুদকের হটলাইনের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সে দুদিনও কল এসেছে।কল রেকর্ডের তথ্য অনুযায়ী ছুটির দুদিনে ৩০ হাজারের বেশি কল এসেছিল। তাই ছুটির দিনেও দুদকের হটলাইন নম্বর চালু রাখতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সেলিনা আক্তার মনি বলেন, টেলিফোন বা যে কোনো নম্বর থেকে হটলাইনে কল করা যাবে। এ জন্য কোনো টাকা কাটবে না।
তিনি বলেন, একাধিক ব্যক্তি একই সঙ্গে অভিযোগ করতে পারবেন। অভিযোগকারীর নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে। এমনকি অভিযোগকারী চাইলে তার বক্তব্য রেকর্ডও করা যাবে। অফিস চলাকালীন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যে কেউ কল করতে পারবেন। জনগণের সঙ্গে দুদকের প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপন ও দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ পেতে হটলাইন খোলা হয়েছে। এতে দুর্নীতির ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই অথবা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে এমন অভিযোগ পেলে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেবে দুদক। এর মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী জনমত সৃষ্টি এবং দুদকের প্রতি জনআস্থা সৃষ্টি হবে বলে আশাবাদী দুদক কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দুদকের হটলাইন উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি। যারা রক্ষক, তারাই ভক্ষক হিসেবে অবতীর্ণ হচ্ছে। এ প্রয়াস বন্ধ হওয়া চাই।
জনগণের অংশগ্রহণ না থাকলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, হটলাইন (১০৬) খোলা হয়েছে। এতে যেকোনো ব্যক্তি দুর্নীতির ঘটনা ঘটার আগে ও পরে অভিযোগ করতে পারবেন। এ হটলাইন খোলার মাধ্যমে দুদকের সঙ্গে মানুষের সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন হলো বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে টোল ফ্রি নম্বরটি অনুমোদন পায় দুদক। হটলাইন নম্বর চালুর আগে শুধু লিখিতভাবে অভিযোগ গ্রহণ করত দুদক।