#

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে দুই হাতের কবজি দিয়ে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে তানিয়া খাতুন। দুটো হাত অচল হলেও দমে যায়নি তানিয়া। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে শিখিয়ে।

শারীরিক প্রতিবন্ধী তানিয়া খাতুন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাগদাহ গ্রামের বীমাকর্মী তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে। দুই ভাই-বোনের মধ্যে তানিয়া খাতুন বড়। জন্মের পর থেকেই তার দুটি হাতে আঙ্গুল নেই।

তানিয়া খাতুন ২০১৭ সালে পূর্ব চন্দ্রখানা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩.৪৫ পয়েন্টে পেয়ে এসএসসি পাস করে। পরে ফুলবাড়ী মহিলা ডিগ্রি কলেজ ভর্তি হয়। এবার এই প্রতিষ্ঠান থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে সে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ওই কেন্দ্রের তৃতীয় তলার ৩০২ নম্বর কক্ষে তানিয়া ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। তানিয়া শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে ২০ মিনিট সময় বাড়তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অন্য সকল শিক্ষার্থীদের মতো নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা দিচ্ছে সে।

তানিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার খুব বেশি চাওয়া পাওয়া নেই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন এইচএসসি পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারি এবং পড়াশুনা শেষে চাকরি করে বাবা-মাকে নিয়ে সমাজে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারি।’

তানিয়ার বাবা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমি সামান্য বীমাকর্মী মাত্র। আমার কোনো জমিজমা নেই। ঘরে প্রতিবন্ধী মেয়ে। কোনো রকমে তার লেখাপড়াটা চালিয়ে যাচ্ছি। মেয়েটি শুধু প্রতিবন্ধী শিক্ষা ভাতা পায়। সরকারিভাবে ঋণ দেওয়া হলে মেয়েটির ভালভাবে পড়াশুনা শেষ করাতে পারবো।’

ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব আমিনুল ইসলাম রিজু জানান, তানিয়া খাতুন অন্য শিক্ষার্থীদের মতোই প্রতিটি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করছে। তবে তানিয়া শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে বাড়তি ২০ মিনিট দেওয়াসহ সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন