দুই হাত হারানো বাহারকে নিয়োগপত্র দিলেন প্রতিমন্ত্রী পলক

লেখক:
প্রকাশ: ১ বছর আগে

দুই হাত হারানো অদম্য তরুণ বাহার উদ্দিন রায়হানকে নিয়োগপত্র দিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এনহান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি প্রকল্পের সব প্রশিক্ষণে সমন্বয় করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমসের (পিএমআইএস) ‘প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক’ পদে তাকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৫ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সম্মেলন কক্ষে বাহার উদ্দিনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়।

বাহার উদ্দিন কক্সবাজারের চকরিয়ার লক্কারচরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ২০০৪ সালের ৩০ অক্টোবর বাহার উদ্দিন বাহার যখন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র, বাড়ির পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বসানো ট্রান্সফরমারে একটি ছোট্ট পাখি ঢুকে পড়ে। সেই পাখি দেখতে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারে হাত দিতেই তা ঝলসে যায়। সেই থেকে তার এক হাত নেই, আরেক হাত আছে কনুই পর্যন্ত। মুখে কলম নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি, এইচএসসি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন তিনি।

বাহার মোটরসাইকেল চালাতে পারেন। মুখে কলম আটকে কম্পিউটারে টাইপ করতে পারেন। কিন্তু, চাকরি দেওয়ার জন্য যারা যোগাযোগ করেছেন, তারা আস্থা পাননি শুধু দুই হাতের দিকে তাকিয়ে। তাদের একটাই ধারণা, হাতের সাহায্য ছাড়া চাকরি করা সম্ভব নয়।

চাকরি পেয়ে অশ্রুভরা নয়নে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বাহার জানান, তিনি কৃতজ্ঞ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের প্রতি, যার ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক বলেছেন, ‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে কোনো অস্ত্র ছাড়াই বীর মুক্তিযোদ্ধারা যেমন যুদ্ধে জিতেছেন, তেমনই এক অদম্য যোদ্ধার নাম বাহার। ইচ্ছাশক্তি প্রবল থাকলে কোনো প্রতিকূলতাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। বাহার উদ্দিন আমাদের সামনে উজ্জ্বলতম একটি দৃষ্টান্ত। দুই হাত নেই, অথচ মুখে কলম আটকে খাতায় লিখে পরীক্ষা দিয়ে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন, অর্জন করেছেন দক্ষতা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই, সে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে উদ্ভাবনী, বুদ্ধিদীপ্ত, সাহসী, সংগ্রামী। কোনো বাধায় নিজেরা দুর্বল হবে না এবং শারীরিক কোনো বাধাই তাদের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইডিজিই প্রকল্প থেকে যে ১ লাখ তরুণকে অগ্রসরমান প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বাহার তাদের জন্য প্রেরণার উৎস। এটা সম্ভব হয়েছে তার মধ্যে থাকা প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার মানসিকতার কারণে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, ইডিজিই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মুহম্মদ মেহেদী হাসান, পলিসি অ্যাডভাইজার আব্দুল বারী, কম্পোনেন্ট টিম লিডার ড. মাহফুজুর ইসলাম শামীমসহ আইসিটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।