গুলশান থানার মাদক ও পল্লবী থানার প্রতারণার মামলায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে পর্নোগ্রাফি আইনে করা মামলায় তিনি জামিন পান। তবে গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জামিন না পাওয়ায় আপাতত তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না। ফলে চার মামলার মধ্যে তিন মামলায় জামিন পেলেন তিনি।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে মাদক ও প্রতারণার অভিযোগে করা পৃথক দুই মামলার জামিন মঞ্জুর করেন। এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের করা মামলায় তার জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন আদালত। এর আগে এই তিন মামলায় তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালত শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য করেছিলেন।
ঢাকা মহানগর আদালতের পেশকার মো. ফয়েজ আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৯ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে গুলশান থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
তার আগে ১৮ আগস্ট তিনদিনের রিমান্ড শেষে তাকে এ মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এসময় হেলেনা জাহাঙ্গীর সেচ্চায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
এদিন ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিমের আদালতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের আইনজীবী প্রতারণার মামলায় জামিনের আবেদন করলে শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে ১৭ আগস্ট পল্লবী থানার পর্নোগ্রাফি আইনে করা মামলায় তার আইনজীবী জামিন আবেদন করলে ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ৩ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত পৃথক চার মামলায় শুনানি শেষে তার ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিনদিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে তাকে হাজির করে পুলিশ। এরপর পল্লবী থানার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাতদিন ও একই থানায় করা প্রতারণার মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। অপরদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চারদিন ও প্রতারণার মামলায় চারদিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরপর গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে আবারও দশদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। এছাড়া গুলশান থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের আরেক মামলায় তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। অপরদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিনদিন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ৩০ জুলাই সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক (অপারেশন) শেখ শাহানুর রহমান। অপরদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তার আগে গত ২৯ জুলাই রাত ১২টার দিকে গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাসায় দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করে র্যাব। এসময় তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, চাকু, বৈদেশিক মুদ্রা, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়।