দীর্ঘদিন বন্ধের পর ভোলায় জমে উঠেছে ইলিশের বাজার

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর জেলায় জমে উঠেছে ইলিশের মোকাম ও বাজারগুলো। এবছর ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ২২ দিন ইলিশ শিকার, আহরোণ, মজুদ ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারী করে সরকার। মঙ্গলবার রাত ১২ টার পর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে গত ২ দিনে ফের ব্যস্ত হয়ে উঠেছে জেলার মাছঘাটগুলো।

জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতি’র সভাপতি মো: নুরুল ইসলাম বলেন, টানা ২২ দিন বন্ধ থাকার পর জেলেরা নতুন উদ্যোমে মাছ ধরায় ব্যস্ত। জালেও প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। ঘাটগুলোতে শত শত কেজি মাছ আসতে শুরু করেছে। আর অনেকদিন পর ইলিশের বাজার শুরু হওয়ায় পর্যাপ্ত চাহিদা রয়েছে বলে তিনি জানান।

সদর উপজেলার মেঘনার ভোলার খাল মাছের ঘাট, কোরার হাট মাছের মোকাম, তুলাতুলি মাছ ঘাট, বিশ্বরোড মাছের ঘাট, জংশন এলাকার মাছঘাট, ইলিশার মাছ ঘাট, শান্তির হাটের মাছঘাট, দৌলতখান উপজেলার পাতার খাল, চরফ্যাসনের সামরাজ মাছ ঘাট, চেয়ারম্যানের খাল মাছ ঘাট, নুরাবাদের খাল, চকিদারের খালের ঘাট, শশীভ’শনের বকসি ঘাটসহ বিভিন্ন মোকামে ইলিশের বাজার জমে উঠার খবর পাওয়া গেছে।
ঘাটগুলোতে চলছে ইলিশের প্যাকেটজাতকরণ ও বরফ দিয়ে সংরক্ষণের কাজ।

এখান থেকে সড়ক ও নৌ পথে বরিশাল, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে ইলিশ। ভোলার খাল মাছ ঘাটের আড়ৎদার মো: আলআমিন ও নিজামউদ্দিন বলেন, মাছ শিকার শুরু হওয়ার প্রথম দিন প্রচুর ইলিশ পাওয়া গেছে। আশা করছেন এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য সময়ের চেয়ে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে। ক্রেতাদের আনাগোনাও প্রচুর। আর দামও আগের চেয়ে অনেক কম। ৩’শ থেকে ৫’শ গ্রামের ওজনের ইলিশ হালি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকার মধ্যে, ৬’শ থেকে ৮’শ গ্রামের হালি ১৭’শ, ৯’শ থেকে ১ কেজি ওজনের বিক্রি হচ্ছে ৪হাজার টাকা।

মূলত ইলিশের মৌসুম শেষের দিকে চলে আসায় দাম কমে যাচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করেন। সামনের দিনগুলোতে দাম আরো কমবে বলে জানান তারা। তবে বড় ইলিশের দেখা বেশি মিলছেনা।

খুচরা বাজারে ইলিশের দাম না কমায় অনেক ক্রেতাকে পাইকারী বাজার থেকে ইলিশ ক্রয় করতে দেখা গেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের দর কষাকষিতে মুখর হয়ে উঠেছে ইলিশের বাজারগুলো।

নতুন বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন কাজী ও সুরোজ মিয়া বলেন, সরকারের মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম জেলায় কঠোরভাবে পালন হওয়ায় সব ধরনের ইলিশ আমদানী বন্ধ ছিল এতদিন।

তাই দীর্ঘ বিরতির পর ইলিশ শিকার শুরু হওয়ায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। পাশাপাশি পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় তাদের লাভও ভালো হচ্ছে বলে জানান।

এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস. এম আজাহারুল ইসলাম বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। এবছর সকলের প্রচেষ্টায় বহুগুণে মা ইলিশ রক্ষা করা গছে। দীর্ঘদিন নিষেধাজ্ঞার কারণে নদীতে ইলিশ শিকারে বিরত ছিলো জেলেরা। অবশেষে গত দুইদিন ধরে মাছ ধরায় ব্যস্ত তারা। আমরা খবর পেয়েছি নদীতে বেশ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে শীতকালেও এখানে ব্যাপক ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তাই আগামী দিনে আরো প্রচুর ইলিশ পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।