“দিস ইজ দা লাস্ট চান্স ” আমরা ১০০% নির্মূল করে ঘরে ফিরতে চাই-পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান https://www.alltimebdnews24.com/?p=33023

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

বরিশাল নগরীর বাজার রোডের খাজা মঈন উদ্দিন চিস্তী (রহ.) মাদ্রাসায় সদস্য ঘোষিত কমিটিকে অবৈধ বলে দাবি করেছেন মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি ও বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সভাপতি আলহাজ্ব এবায়দুল হক চাঁন। একই সাথে কোন প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যকে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় নগরের আগরপুর রোডস্থ শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের সামনে এই অভিযোগ তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলন এবায়দুল হক চাঁন অভিযোগি করে বলেন, মাদ্রাসার মুহতামিম (মাদ্রাসা সুপার) আব্দুল হালিম পদাধিকার বলে কমিটির সাধারন সম্পাদক। তিনি সভাপতি ও কমিটির অন্যকোন সদস্যকে দাওয়াত বা না জানিয়ে নিজে একটি মণগড়া কমিটি গঠন করেছেন। যা সম্পূর্ন অবৈধ। নিজেকে বর্তমান সভাপতি দাবি করে এবায়দুল হক চাঁন বলেন, যেখানে কোন গঠনতন্ত্র নেই সেখানে কোন নিয়মের বলে কমিটি ঘোষনা করা হল।

তিনি বলেন, বরিশাল নগরীর বাজার রোডের খাজা মঈন উদ্দিন চিস্তী (রহ.) মাদ্রাসা কমিটিতে গত ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হয়। একাধিক ব্যাক্তির প্রচেষ্টায় মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড সম্পন্ন করা হয়। ওই সময়ে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ১০ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করেন। বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রী ও ব্যবসায়ীরা অনুদান প্রদান করে। মাদ্রাসা স্থাপানের পর সামনে একটি মার্কেটও নির্মান করা হয়।

এছাড়া মাদ্রাসার জন্য পেছনের জমি ক্রয় করা হয়। এখন সেই জমি দখল করে রেখেছে মাদ্রাসার সাতজন শিক্ষক। তারা ওই জমিতে বসতবাড়ী নির্মান করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। আমি তাদেরকে ওই জমি ছেড়ে দিয়ে মাদ্রাসার ভবন নির্মানের কথা বললে তারা আমার কথার কর্ণপাত করেনা। এমনকি মার্কেট থেকে হওয়া আয়ের অর্থ তারা ব্যাংকের মাধ্যমে নিজেরাই খরচ করছেন। আমি সভাপতি হওয়া সত্বেও তারা আমার কথা শোনেনা। কারণ আমাদের মাথায় টুপি আর দাড়ি নেই।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বাজার রোডের খাজা মঈনউদ্দিন চিস্তী (রহ.) মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন সৈয়দ কাওসার হোসেন। তিনি ছিলেন আজীবন সভাপতি। তার মৃত্যুর পর আমি এ মাদ্রাসার সভাপতি নির্বাচিত হই। গঠনতন্ত্র না থাকায় প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী যিনি সভাপতি থাকবেন তার মৃত্যুর আগে অন্য কেউ নতুন করে সভাপতি হতে পারবে না। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এমটাই হয়ে আসছে।

কিন্তু২০১৪ সালে আমি সভাপতি হওয়ার পর মাদ্রাসা সুপার হিসেবে নিয়োগ পান আব্দুল হালিম। এর পর থেকেই সভাপতির কথায় কর্ণপাত না করে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে মাদ্রাসা পরিচালনা করেন সুপার। সুষ্ঠুভাবে মাদ্রাসা পরিচারনার জন্য কোন প্রকার বিধিমালা অনুসরণ করা হয় না। এমনকি আয় ব্যয়ের সুষ্ঠু হিসাবও রক্ষিত হয় না। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যপর্যন্ত আয় ব্যয়ের সুষ্ঠু হিসাব এমনকি অডিটও হয়নি। আমরা মাদ্রাসা কমিটি বিষয়টি সুপারকে বললে তিনি প্রতি বারই কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন। এর ফলে যারা কমিটিতে রয়েছেন তাদের উপরে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে যায়।

সভাপতি থাকাবস্থায় নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে এবায়দুল হক চাঁন বলেন, ‘মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যপর্যন্ত কোন প্রকার বিধিমালা বা গঠনতন্ত্র প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি। তবে বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে গঠনতন্ত্র সংগ্রহ করে খাজা মঈন উদ্দিন চিস্তী (রহ.) মাদ্রাসার গঠনতন্ত্র প্রস্তুত প্রণালীর কাজ চলছে। তাই অচিরেই মাদ্রাসা সুপারের স্বেচ্ছাচারিতা ও সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিল করে মাদ্রাসার দায়িত্বশীলদের নিয়ন্ত্রণের জন্য বিধিমালা প্রয়ণয়ন ও তার সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা আবশ্যক কবে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসা সুপার প্রতিষ্ঠা ও প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ-এমপির নিকট একটি অভিযোগ দিয়েছেন। যেখানে তিনি মাদ্রাসার সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন ও সহ-সভাপতি আনিছুজ্জামান খান কামালের ওই কমিটিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ বলে আক্ষায়িত করা হয়। পাশাপাশি তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদ্রাসার স্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। তারা মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুন্নকারী কর্মকান্ডে নিয়োজিত থেকে বিগত পাঁচ বছরে মাদ্রাসা মার্কেট কমপ্লেক্সের কোন আয় ব্যয়ের হিসাব মাদ্রাসা সুপার ও শিক্ষকদের জানাননি বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। যেখানে শিক্ষকরা জানতে চাইলেও এবায়দুল হক চান ও আনিছুজ্জামান খান কামালসহ কমিটির আরো কয়েকজন সদস্য শিক্ষকদের সাথে অসদ আচারণ করেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে খাজা মঈন উদ্দিন চিস্তী (রহ.) মাদ্রাসার সুপার আব্দুল হালিম বলেন, ‘মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি কাওসার হোসেনের মৃত্যুর পরে এবায়দুল হক চাঁন সু-কৌশলে সভাপতি হন। এর পর থেকেই তিনি মাদ্রাসায় বিশৃঙ্খলা করে আসছিলেন। আমাদের মাদ্রাসার একটি মার্কেট রয়েছে। যেখান থেকে বছরে কোটি টাকা আয় হয়। কিন্তু দুঃখজন বিষয় হলো বিগত ৫ বছর ধরে ওই মার্কেটের আয় এবং ব্যয়ের কোন হিসাব এবায়দুল হক চাঁন আমাদেরকে দেননি। আমি মাদ্রাসা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হওয়া সত্যেও আমাকেও তিনি এ বিষয়ে কোন হিসাব বা কথা বলার সুযোগ দেননি।