অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবারের মতো আ হ ম মুস্তফা কামালের দেয়া ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ভ্যাটের পরিধি যেমন ব্যাপক হারে বিস্তৃত করা হয়েছে, তেমনি নিত্য ব্যবহার্য কিছু পণ্যের ভ্যাট হার কমানো ও কিছুক্ষেত্রে বিভিন্ন শুল্ক ছাড় দেয়া হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কমতে পারে।
প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে-
ক্যানসার প্রতিরোধক ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালে কর অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হয়েছে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত উপকরণের শুল্ক কমানো হয়েছে।
পাউরুটি, বনরুটি, হাতে তৈরি কেক প্রতি কেজি ১৫০ টাকা পর্যন্ত মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং এসব পণ্যের দাম কমবে। দেশে উৎপাদিত মোটরসাইকেলেরও দাম কমবে।
এ ছাড়া কৃষি যন্ত্রপাতি পাওয়ার রিপার, পাওয়ার টিলার অপারেটেড সিডার, কম্বাইন্ড হারভেস্টর, লোরোটারি টিলার, লিস্ট পাম্পের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ফলে এসব পণ্যেরও দাম কমবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন হয়। এটি দেশের ৪৮তম এবং বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট। ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয় ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। দেশের ৪৮ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট এটি।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। বরাবরের মতো বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার প্রথম বাজেট। যদিও গত সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে অনেক বাজেট প্রণয়নে পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।
শুরুতে দাঁড়িয়ে বাজেট বক্তৃতা শুরু করলেও পরে স্পিকারের অনুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী নিজ আসনে বসে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন। কিন্তু বিকেল ৪টার পর অসুস্থ অর্থমন্ত্রীর পক্ষে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন সম্ভবপর না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পিকারের অনুমতি নিয়ে বাকি অংশ সংসদে উপস্থাপন করেন।
বেলা ৪টা ৪১ মিনিটে ‘প্রস্তাবিত বাজেট সংসদে উপস্থাপিত হলো’ মর্মে ঘোষণা দেন স্পিকার।
প্রস্তাবিত বাজেট পাস হবে ৩০ জুন। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।
এর আগে মন্ত্রিসভা ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের অনুমোদন দেয়। বাজেট ঘোষণার আগে দুপুর ১টার একটু পর জাতীয় সংসদ ভবনে বিশেষ বৈঠকে মন্ত্রিসভা এ অনুমোদন দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার এ বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছর মূল বাজেটের আকার দাঁড়ায় চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। তবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, রাজস্ব আদায় করতে না পারা এবং উন্নয়ন প্রকল্পে পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ খরচ করতে না পারায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয় ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী বাজেটের আকার সংশোধিত বাজেট থেকে ৮০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা বেশি।