এক বছরের বেশি সময় ধরে সদস্যদের সঙ্গে চলমান কূটনৈতিক সঙ্কটের সমাধান না হওয়ায় আরব রাষ্ট্রগুলোর জোট উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) তীব্র সমালোচনা করেছে কাতার। শনিবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি জিসিসি জোটের সমালোচনা করে বলেছেন, জোট এবং জোটের মহাসচিব দন্তবিহীন।
তিনি বলেন, আঞ্চলিক এই জোটের পুনর্গঠন ও পরিচালনার জন্য নতুন নীতিমালা করা দরকার। কাতারের রাজধানীতে অনুষ্ঠিত দোহা ফোরামের বার্ষিক অধিবেশনে আল থানি বলেন, উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) ব্লক এবং এর মহাসচিবের দাঁত নেই।
২০১৭ সালের ৫ জুন সৌদি নেতৃত্বাধীন জিসিসির সদস্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও জিসিসির বাইরের দেশ মিসর কাতারের বিরুদ্ধে স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে অবরোধ আরোপ করে।
সৌদি নেতৃত্বাধীন এসব দেশ সেই সময় কাতারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা তৈরির অভিযোগ আনে। কিন্তু কাতার বরাবরই সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি বলেছেন, তার দেশ এখনো জিসিসির প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ। তবে এর যেসব নিয়ম-নীতি আছে সেগুলোর ভালো প্রয়োগ দরকার। দোহার সঙ্গে অন্যদের চলমান কূটনৈতিক সঙ্কট সমাধানের জন্য জিসিসি জোটের সংস্কারের ইঙ্গিত দেন তিনি।
তিনি বলেন, গত বছরের সৌদি, আমিরাত, বাহরাইন ও মিসরের আরোপিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে কাতার এখনো কুয়েত এবং অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তিগুলোর দিকে চেয়ে আছে।
কাতারের এই মন্ত্রী বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে, পশ্চিমা বিশ্বের জন্য বিচ্ছিন্ন এবং আলাদা দেশগুলোর চেয়ে একটি ব্লক হিসেবে আমরা অধিক শক্তিশালী। তিনি বলেন, জিসিসির কোনো দাঁত নেই এবং বিরোধ নিরসনে একটি প্রস্তাবনার প্রক্রিয়া থাকা প্রয়োজন।
গত ৬ ডিসেম্বর বিশ্বের শীর্ষ তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় কাতার। আগামী বছরের জানুয়ারিতে এই সংগঠনের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে বলে জানায়। কাতারের এই সিদ্ধান্ত তেল-নির্ভর অর্থনীতির দেশ প্রতিবেশি সৌদির জন্য এক ধরনের ধাক্কা হিসেবে দেখছেন অনেকেই।
এছাড়া গত সপ্তাহে সৌদি বাদশাহ উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) রিয়াদ সম্মেলনে কাতারের আমিরকে আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু ওই সম্মেলনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি অংশ নেননি।