স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের (এসএসএমসি) পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আদর্শিকভাবে ডা. মো. আবু জাফর জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের সদস্য হলেও চিকিৎসক মহলে তিনি একজন দক্ষ একাডেমেশিয়ান ও প্রশাসক। তাই চিকিৎসক মহলের প্রত্যাশা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দীর্ঘ সময় পর একজন দক্ষ প্রশাসক পেয়েছে।
এবিষয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চিকিৎসক মহলে ডা. মো. আবু জাফর একজন সৎ লোক হিসেবে পরিচিত। একইসঙ্গে তিনি একজন দক্ষ একাডেমেশিয়ান ও প্রশাসক।
সলিমুল্লাহ মেডিকেলের শিক্ষার্থী হাসিব জানান, তিনি অনেক ভালো শিক্ষক ছিলেন। আমাদের শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয়। তার ক্লাস শুনলেই আমরা ক্লাস মিস দিতাম না। তিনি দক্ষ শিক্ষক। এছাড়া তিনি ছাত্রাবাসের দায়িত্বেও ছিলেন। তার হাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এগিয়ে যাবে।
এছাড়াও নতুন মহাপরিচালক হিসেবে নাম ঘোষণার পর চিকিৎসকদের বিভিন্ন গ্রুপগুলোতে নতুন মহাপরিচালকের দক্ষতা ও সৎ কাজের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে হয়। বিভিন্ন পোস্টে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাতেও দেখা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কর্মরত নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক বলেন, স্যারকে যতটুকু চিনি ড্যাবপন্থি চিকিৎসক। কিন্তু তিনি কখনই সেটাতে ফলাও করে প্রচার করতেন না। যেকারণে তিনি শিক্ষার্থী-শিক্ষক সবার কাছে পছন্দেরও ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইতিহাসে অন্যতম একজন ভালো প্রশাসক এসেছেন। তার নেতৃত্বে অন্যসব মহাপরিচালকের চেয়েও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও গতিশীল হবে।
প্রসঙ্গত, অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি এমবিবিএস শেষ করেন ১৯৮৯ সালে। এরপর এমসিপিএস (জেনারেল সার্জারি) শেষ করেন ১৯৯৮ সালে, এফসিপিএস করেন (জেনারেল সার্জারি) ১৯৯৯ সালে এবং এমএস (শিশু সার্জারি) সম্পন্ন করেন ২০২০ সালে।
প্রখ্যাত এই চিকিৎসক অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর। কিন্তু বৈষম্যের শিকার হয়ে পরবর্তী পদোন্নতি অধ্যক্ষ (গ্রেড-২) এবং ডিজি (গ্রেড-১) হতে বঞ্চিত হন। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে ১৫ বিসিএস এবং ১৭ বিসিএস হতে ডিজি, এডিজি, অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হলেও ১৩ বিসিএসের একজন যোগ্য কর্মকর্তা হিসাবেও পদোন্নতি বঞ্চিত ছিলেন তিনি।
স্বাস্থ্যের এই নতুন মহাপরিচালককে ২০০০ সাল হতে দীর্ঘ ৮ বছর ঢাকার বাইরে পদায়িত রাখা হয়। তিনি ২০০৮ সালে বর্তমান কর্মস্থলে যোগদান করেন। একইসাথে শিশু সার্জারি এবং জেনারেল সার্জারি সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী হওয়া সত্ত্বেও ঢাকা মেডিকেলে অধ্যাপক পদে পদায়নে বাধার সম্মুখীন হন বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।