প্রিন্ট এর তারিখঃ জানুয়ারী ৩১, ২০২৫, ৯:১০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৮, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে সরকার কাজ করবে: পানি সম্পদমন্ত্রী
পানি সম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, সুপেয় পানির সংরক্ষণ এবং বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে সমস্যার সমাধানে পরিকল্পিত ও সুচিন্তিত পদক্ষেপ নিতে হবে। সাথে গৃহীত প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়নে তত্ত্বাবধান ও তদারকি ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি রবিবার বিকেলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পাউবোর খুলনা জোনের প্রধান প্রকৌশলী মো. লুৎফর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু হোসেন ও অখিল কুমার বিশ্বাসসহ পাউবোর কর্মকর্তারা, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ মিজানুর রহমান মিজান, যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্য উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর আমি খুলনাসহ দক্ষিণ অঞ্চলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে এসেছি। আমি কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। আমাদের সমস্যা অনেক, প্রয়োজনও অনেক। তাই আমাদের সকলকে ধৈর্য সহকারে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, সুন্দরবন না থাকলে আইলা ও সিডরের আঘাত ঢাকায় গিয়ে পৌঁছাতো। তখন এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হত। কিছুসংখ্যক পরিবেশ বিরোধী মানুষ সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য ধ্বংস করছে। নদী-খাল আটকে দিচ্ছে। অপরিকল্পিত বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। মনে রাখতে হবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ নির্মাণ করে সিডর-আইলার মতো জলোচ্ছ্বাস ঠেকানো যায় না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকাতে হলে সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে আরো নতুন নতুন সুন্দরবন সৃষ্টি হচ্ছে। তাই পরিবেশকে ধ্বংস না করে তাকে রক্ষা করা আমাদেরই দায়িত্ব। এ অঞ্চলে লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে। সুপেয় পানি সংরক্ষণ করা গেলে মানুষ লবণাক্ততার হাত থেকে রক্ষা পাবে।
পানি সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনে আমাদেরকে খাল কাটতে হবে। একটি খালের সঙ্গে আরেকটি খালের সংযোগ স্থাপন করতে হবে। নদীর পানির প্রবাহ বাড়াতে হবে। নদী-খাল থেকে লবণাক্ত পানি বের করে দিতে হবে। তাহলেই এ অঞ্চলের মানুষ সুপেয় পানি পাবে।
তিনি বলেন, আমি ইতিমধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ সব বাঁধের তালিকা নিয়েছি। আগে বাঁধ সংস্কার ও নির্মাণে জনগণকে সম্পৃক্ত করা হত না। এখন জনগণকেও এ সব কাজে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। তাদের মতামত নেয়া হচ্ছে।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে মতবিনিময়
জাতীয় পার্টি- জেপির চেয়ারম্যান ও পানি সম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু রবিবার সন্ধ্যায় সংগঠনের খুলনা জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এখানে তিনি বলেন, দেশে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। তবে এ পথ সহজ নয়। হোঁচট খাওয়ার যেমন সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি সবার প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনও হতে পারে। আজকের প্রজন্ম জানে না অতীতের চেয়ে কী পরিবর্তন বাংলাদেশের সর্বত্র ঘটে গেছে। গত ৩২-৩৩বছরে উন্নয়নের ধারায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। আমাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক মিল রয়েছে। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা চেয়েছিল, আমরাও স্বাধীনতা চেয়েছিলাম। দীর্ঘকাল আমাকে আল্লাহতায়ালা মন্ত্রিত্ব করার সুযোগ দিয়েছেন। তাই তাদের সঙ্গে আমাদের মিল বেশি। তবে জাতীয় পার্টির সাথে বিএনপিরও মিল রয়েছে। এ দল দুটি আওয়ামী লীগের মতো আন্দোলনকারী দল নয়। ক্ষমতাসীন অবস্থায় জেপি ও বিএনপি দল গঠন করেছিল। ক্ষমতাশ্রয়ী দল ও জনতার মধ্য থেকে ক্ষমতায় আসা দলের চরিত্র এক নয়। ’৯৫-৯৬ সালে আমরাও নির্যাতিত-অত্যাচারিত হয়েছি।
আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের আশাবাদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমন এমন অবস্থার সৃষ্টি হবে-যেখানে সবাই সুখে-শান্তিতে সহঅবস্থানের নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে একত্রে বসবাস করবে। দেশজুড়ে সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করবে। রাতারাতি কোনো পরিবর্তন সম্ভব নয়। পাকিস্তান আমলে নানা কারণে প্রত্যাশিত পরিবর্তন ঘটেনি। তখনকার আমাদের চাওয়া স্থায়ী হয়নি। আজ আমাদের এমন আদর্শভিত্তিক রাজনীতি অনুসরণ করা দরকার, যেখানে মানুষের মধ্যে ঐক্য থাকবে, সম্প্রীতি-সমঝোতা থাকবে। এই ধরনের আদর্শভিত্তিক রাজনীতিকেই আমাদের অনুসরণ করা উচিত। যেখানে ঝগড়া-বিবাদ, দ্বন্দ্ব-সংঘাত বর্জন করে সবাই মিলেমিশে বসবাস করার পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব হবে। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের মানুষ একই ভাষাভাষী, অভিন্ন সংস্কৃতি এবং একই ভূখণ্ডে বসবাস করি। যার সাথে অনেক দেশের তুলনা চলে না। তাই এ দেশকে আমাদের সকলকে ভালোবাসতে হবে। তিনি জাতীয় পার্টির সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ শফিকুল হামিদ চন্দন।
বক্তব্য রাখেন জেলা জেপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোশারফ হোসেন হাওলাদার, মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি এমএস রাশিদা করিম, সাধারণ সম্পাদক কাজী মাছুদ আহম্মেদ, ডা. এমএন আলম সিদ্দিকী, চৌধুরী হাবিবুর রহমান, বাগেরহাট জেলা জেপি সভাপতি সিরাজুল মনি, মুক্তিযোদ্ধা মহম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম মিলন, মহানগর ছাত্র সমাজ সভাপতি মো. নাজমুল হুদা, জেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক আসমা সিদ্দিকা সুমি, অ্যাডভোকেট দিলিপ কুমার মিস্ত্রি, অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, ডা. শামীমা পারভীন প্রমুখ।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com
@Earthtimes24.com