দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্বেগ থাকলেও বরিশালের নগর প্রশাসন ছাড়াও এ অঞ্চলের জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তেমন কোন হেলদোল নেই। পরিস্থিতি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে অনেকটাই উদ্বেগজনক। তবে গত বছর এসময়ে জনগনের মাঝে যতটা সচেতনতা ছিল, এবার তার দ্বিগুন উদাশীনতা লক্ষণীয়।
শনিবার সকালের পূর্ববর্তি ৪৮ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় আরো ৫৮ জন নতুনকরে করোনা সংক্রমিত হয়েছে। যারমধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২২ জন। আর গত ৪৮ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৭ জন। শুক্রবারে কারো সুস্থ হয়ে ওঠার খবর দেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে এ অঞ্চলে শুক্রবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৬, আর শণিবারে ১২ জন। গত ৪৮ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলে কোন মৃত্যু সংবাদ ছিলনা।
শনিবার পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১১ হাজার ৬৯ জনে। আর এ পার্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২০৮ জনের। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবনুযায়ী শনিবার সকাল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৫৭০ জন।
আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় এখনো শীর্ষে বরিশাল মহানগরী। বিভাগের ৬% জনসংখ্যার এ মহানগরীতে শণিবার পর্যন্ত ৪ হাজার ৮শ’র ওপরে করেনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন প্রায় ৫০ জন। মহানগরী সহ বরিশাল জেলায় মোট আক্রান্ত ৫ হাজার ৮৪ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯০ জনের। গত ৪৮ ঘন্টায় এ জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৪ জন।
পটুয়াখালীতে গত ৪৮ ঘন্টায় নতুনকরে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন। জেলাটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত ১,৭৭০ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৪১ জন। ভোলাতে এসময়ে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১। এ দ্বীপ জেলায় এ পর্যন্ত ১,০৫৪ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১১ জন। পিরোজপুরেও গত ৪৮ ঘন্টায় নতুন ৭ জন সহ জেলাটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১,২৩৪ জন। মারা গেছেন ২৫ জন। ঝালকাঠীতে এসময়ে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৫ জন। জেলাটিতে এ পর্যন্ত ৮৭১ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১৯ জন।
আর বরগুনাতে গত ৪৮ ঘন্টায় নতুন একজনের আক্রান্তের খবর জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ফলে জেলাটিতে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫৬ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের।
দক্ষিনাঞ্চলের জেলাগুলোতে গড় সনাক্তের হার এখন প্রায় ১৪%। সুস্থতার হার প্রায় ৯৬%। আর মৃত্যুহার এখন প্রায় ১.৮৯%। সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে এখনো বরিশাল মহানগরী ‘করোনার আতুর ঘর’ হয়ে আছে। এনগরীতে জনসংখ্যার তুলনায় করোনা সংক্রমন ও মৃত্যুহার অনেকগুন বেশী। কিন্তু এরপারেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে জনগনের মধ্যে নুন্যতম কোন আগ্রহ লক্ষনীয় নয়।
আর জনসমাগম রোধেও নগর ও জেলা প্রশাসনের নুন্যতম কোন গরজ নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি নতুনকরে করোনা সংক্রমন উদ্বেগজনক হারে বাড়তে শুরু করলেও তা নিয়ে কোন সতর্কতামূলক প্রচারনাও নেই।