বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলবাসীকে আর অবহেলায় থাকতে হবে না, পদ্মা সেতুর পর এবার পিরোজপুরের কঁচা নদীতে বঙ্গমাতা সেতু উদ্বোধনের ফলে পিরোজপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি ঘটবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
রোববার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে পিরোজপুরের কঁচা নদীতে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চল নদী মাতৃক এলাকা হওয়া যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই দুর্গম ছিল তবে একের পর এক সেতু ও সড়ক নির্মাণের ফলে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সবসময় অবহেলিত। তাই তাদের অবস্থার উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন করেছি। পদ্মা সেতুসহ দক্ষিণাঞ্চলে অনেক সেতু, কালভার্ট নির্মাণ করেছি।
তিনি বলেন, কঁচা নদীতে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগে আর কোনো বাধা থাকছে না। পিরোজপুরে প্রচুর পেয়ারা হয়। আমরা এখন থেকে ঢাকা বসেই খুব দ্রুত এই জেলার মজার পেয়ারা খেতে পারবো।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই অঞ্চলের এক ইঞ্চি জমিও যেনও অনাবাদি না থাকে। সারাদেশের মানুষকে পানি, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন হতে হবে। সারা বিশ্বে মন্দা দেখা দিয়েছে, আমাদের আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে। দক্ষিণাঞ্চরের মানুষকে উৎপাদনমুখী হতে হবে। আমরা লবণাক্ত জমিতে ধান রোপণের জাতও উদ্ভাবন করেছি। আমরা আমাদের খাবার নিজেরাই উৎপাদন করবো।
আগামীতে দেশকে আরও উন্নত সমৃদ্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এসময় রাশিয়া ইউক্রেনের মতো বিশ্ব আর কোনো যুদ্ধ চায় না জানিয়ে শেখ হাসিনা তুলে ধরেন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে আবারও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের আহ্বান জানান তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ আরও অনেকেই।
আগে সেতুটির নাম ছিল বেকুটিয়া ব্রিজ। পরবর্তীতে সেতুটির নামকরণ করা হয় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। সেতুটিকে ঘিরে দুই প্রান্তের জনসাধারণের মধ্যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে।
এ সেতুটির মাধ্যমে রাজধানী থেকে বেনাপোল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে। বরিশাল বিভাগীয় সদরের সঙ্গে খুলনা বিভাগীয় শহরের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনসহ কুয়াকাটা সাগরসৈকত, পায়রা সমুদ্রবন্দর, মোংলা সমুদ্রবন্দর, বেনাপোল ও বাংলাবান্দা স্থল বন্দরকে সেতুটি সরাসরি সড়ক সংযুক্ত করবে।
সেতুটির অবস্থান রাজাপুর-নৈকাঠী-বেকুটিয়া-পিরোজপুর জেলা সড়কে। পাশাপাশি পদ্মা সেতুর সুবাদে দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য এ সেতুটি বিশেষ সুবিধা সৃষ্টি করবে।
সড়ক পথে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক এ মহাসড়কটি প্রায় ১০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের হলেও যান চলাচলে সময় লাগত চার ঘণ্টা। কঁচা নদীর বেকুটিয়া পয়েন্টে সেতুটি চালুর পর এ সময় এক ঘণ্টা কমে আসবে, থাকছে না ফেরির বিড়ম্বনা।’