চতুর্থ ধাপে আগামী ৩১ মার্চ বরিশাল বিভাগের উপজেলাগুলোতে ভোটগ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনকে সামনে রেখে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পরেছে। চেয়ারম্যান পদে সকল উপজেলার জন্য কেন্দ্রের কাছে তিনজনের নাম প্রস্তাব করার নির্দেশনা থাকলেও বরিশালের অধিকাংশ উপজেলাতে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একক প্রার্থীর নাম কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এজন্য গত কয়েকদিন থেকে উপজেলার সম্ভাব্য প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দদের নিয়ে বর্ধিত সভা করে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে জেলার হিজলা, মুলাদী ও বানারীপাড়া উপজেলায় একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। দলীয় কোন্দল ঠেকাতে নির্বাচনের আগেই অপর উপজেলাতেও একক প্রার্থী করার নানামুখী চেষ্টা চলছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস জানান, চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী চূড়ান্ত করবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড। তার আগে তৃণমূল থেকে তিনজন করে প্রার্থীর একটি তালিকা কেন্দ্র থেকে চাওয়া হয়েছে। বরিশালের প্রত্যেক উপজেলার তিনজনের প্যানেল চূড়ান্ত করার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হচ্ছে। যে উপজেলাতে সকল প্রার্থীরা একমত হয়ে একজনকে সমর্থন জানাবে সেখান থেকে কেবল একক প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-দফতর সম্পাদক কাইউম খান কায়সার জানান, প্রথমদফায় জেলার নয়টি উপজেলায় চেয়ারম্যান এবং পুরুষ ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্তসহ আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। এতে আবেদন করেছেন ১৭১ জন। যারমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৭২ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৭ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪২ জন। পরবর্তীতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বরিশাল সদর উপজেলা, বানারীপাড়া, হিজলা, মুলাদী, বাকেরগঞ্জ ও উজিরপুর উপজেলার প্রার্থীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাশী সকল প্রার্থীরা সমঝোতা করায় বানারীপাড়ার বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ফারুক, মুলাদীতে বর্তমান চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম খান মিঠু এবং হিজলার বর্তমান চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ টিপুকে আবারও দলীয় প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উজিরপুর উপজেলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম জামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু ও বর্তমান চেয়রম্যান হাফিজুর রহমান ইকবালকে নিয়ে তিনজনের প্যানেল গঠণ করা হয়েছে। এরমধ্যে তৃণমূলের জনপ্রিয়তায় আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু এগিয়ে রয়েছেন।
সাক্ষাতকারের অপেক্ষায় থাকা গৌরনদী উপজেলার সম্ভাব্য পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে তৃণমূলের জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান ভাইসচেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী। আগৈলঝাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত এবং বাবুগঞ্জ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার খালেদ হোসেন স্বপন তৃণমূলের জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন। জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শেষ না হওয়ায় এখন সেখানে নির্বাচন হচ্ছেনা। একইভাবে বিভাগের প্রতিটি উপজেলায় নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পরেছে।
এরমধ্যে দক্ষিণের প্রত্যন্ত এলাকা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় দীর্ঘদিন থেকে গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ। স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুদা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ বির্নিমানের অসমাপ্ত কাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে অবহেলিত জনপদের রাঙ্গাবালী উপজেলায় সম্পন্ন করতে চান মুজিব আদর্শের সৈনিক মাসুদুর রহমান মাসুদ। তিনি রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষনা করার পর সাধারণ ভোটারদের মধ্যে পুরনোসব হিসেব নিকেশ পাল্টে যেতে শুরু করেছে। মাসুদুর রহমানের পক্ষে দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের ভোটাররা প্রচারণায় মুখরিত করে তুলেছেন রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর থেকে প্রত্যন্ত এলাকা।