দক্ষিণাঞ্চলকে মাদকমুক্ত করা হবে–র‌্যাব প্রধান বেনজীর আহম্মেদ

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

সারা দেশের ন্যায় গোটা দক্ষিণাঞ্চল মাদক মুক্ত হবে কুয়াকাটায় র‌্যাব প্রধান বেনজির আহম্মেদ। চলো যাই যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ম্যারাথন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠানে  সকাল ১০ টায় কুয়াকাটা সৈকতে এসব কথা বলেন।
র‌্যাব ডিজি আরো বলেন, মাদক, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ এখন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। মাদক, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতি- এ তিনটি অভিশাপ। উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে সমাজকে এ অভিশাপমুক্ত করতে হবে, এ তিন অভিশাপ রুখে দিতে হবে। মাদকবিরোধী সচেতনতার লক্ষ্যে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আয়োজিত ‘বিচ ম্যারাথন’ দৌড়াও বাংলাদেশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি এ কথা বলেন।

মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ এবং দুর্নীতিকে অভিশাপ হিসেবে উল্লেখ করে এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে এ তিন অভিশাপ রুখে দিতে হবে।
বছরে এক লাখ কোটি টাকার মাদকের লেনদেন হয় জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, এ বিপুল অংকের অর্থ যদি দেশের উন্নয়নে ব্যয় করতে পারি, তাহলে দেশটা আরও এগিয়ে যেত। আমরা একটি সুস্থ-সবল পরবর্তী প্রজন্ম চাই।
এসময় তিনি বলেন,শুধু মাদক ব্যবসায়ীই নয় যারা এর পেছনে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থায়ন করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

র‌্যাব প্রধান বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধসহ যে কোনো সংকটের সময় দেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ অসম্ভবকে সম্ভব করার দেশ।
মাদকের বিরুদ্ধে সবার জোরদার ভূমিকা প্রত্যাশা করে বেনজীর আহমেদ বলেন, সমাজকে মাদকমুক্ত করার দায়িত্ব শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একার নয়। মাদকের বিরুদ্ধে সবারই সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে। সরবরাহ এবং চাহিদা বন্ধ করতে হবে। সবাই একসঙ্গে এগিয়ে এলে আমরা দ্রুতই মাদকমুক্ত সমাজ গঠন করতে পারবো।

অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে র‌্যাব ডিজি বলেন, পরিবারকে নজর রাখতে হবে, যেন সন্তানরা মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে না যায়। মাদকে জড়িয়ে গেলেও তাকে ফিরিয়ে আনার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। সমাজ-রাষ্ট্রের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে মাদকের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসতে হবে।

বেনজীর আহমেদ বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্যই আজকের এ বিচ ম্যারাথন। আগামী দিনগুলোতে অবশ্যই মাদককে আমরা পরাজিত করবো, আজকে এই হোক প্রতিজ্ঞা।
বেনজির আহম্মেদ আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের একটা ছোট অংশ মাদক ব্যবসার সাথে জরিত এক শ্রেনীর রোহিঙ্গা এতো দেষপারেট যে, তারা জিরো লাইন অতিক্রম করে মাইন উপেক্ষা করে মাদক নিয়ে আসে। কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ প্রতিষ্ঠার পর ্এক বছরে চল্লিশ লাখ ইয়াবা উদ্ধার ও বন্ধুক যুদ্ধে ৫-৬জন নিহত হয়েছে বলে বেজির জানান। তবে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য বহুমুখী নিরাপত্তা সমস্যা তৈরী করছেন বলে তিনি মনে করেন। অত্র দক্ষিনাঞ্চলও মাদকমুক্ত করা হবে ইনশাল্লাহ।
‘চলো যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে, দৌড়াও বাংলাদেশ’ শিরোনামে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ১০ কিলোমিটার এ ম্যারাথনের আয়োজন করেছেন র‌্যাব ফোর্সেস। এতে অংশ নিয়েছেন পটুয়াখালী ও বরগুনার জেলার স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন পেশার প্রায় বরো’শ শিক্ষার্থী।

এর আগে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিচ ম্যারাথনের উদ্বোধন করেন র‌্যাব ডিজি। এরপর তিনি নিজেও বিচ ম্যারাথনে অংশ নেন।

র‌্যাব বরিশাল-৮ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি, আতিকা ইসলাম, পিপিএম, এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পুলিশ কল্যান সমিতির সহ সভাপতি মিসেস জীসান মীর্জা। এসময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম,বিপিএম,পিপিএম,পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো.মতিউল ইসলাম, পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. মইনুল হোসেন, পটুয়াখালী পৌরসভার মেয়র মো.মহিউদ্দিন আহম্মেদ,কুয়াকাটা পৌর মেয়র আঃ বারেক মোল্লা, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মুনিবুর রহমান সহ র‌্যাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, টুরিস্ট পুলিশ, স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা বৃন্দ।