তৃতীয় স্বামীর ঘরে মিললো গৃহবধূর মরদেহ

:
: ২ years ago

ফেনীতে বিয়ের দেড়মাসের মাথায় তৃতীয় স্বামীর ঘর থেকে সুচনা আক্তার (৩৮) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সোমবার (৯ মে) বিকেলে ফেনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিধারা আবাসিক এলাকার পেয়ার প্যালেসের ভাড়া বাসা থেকে ওই নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সুচনা আক্তার ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়ইয়া গ্রামের মৃত আবদুল করিমের মেয়ে।

স্থানীয়রা জানান, মার্চ মাসের শেষের দিকে পরিবারের অবাধ্য হয়ে মাধ্যমে পৌর শহরের কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড এলাকার বিসমিল্লাহ ফার্নিচারের শ্রমিক জুনায়েদ আহমেদ সাগরকে বিয়ে করেন সুচনা আক্তার। বিয়ের পর তিনি স্বামীকে নিয়ে শহরের শান্তি ধারা আবাসিক এলাকার পেয়ার প্যালেসের নিচতলায় ভাড়া বাসায় ওঠেন।

সোমবার বিকেলে বাসার দারোয়ান পরিচ্ছন্নতার কাজ করার সময় জানালা দিয়ে গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। তাৎক্ষণিক পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারের পর ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

ঘটনার পর দেখতে আসা উৎসুক জনতার ভাষ্য, ফার্নিচার শ্রমিক জুনায়েদ আহমেদ সাগর সুচনাকে প্রেম করে বিয়ে করেছেন। এটি সাগরের দ্বিতীয় বিয়ে। শুধু তাই নয়, সূচনাও এর আগে দুটি বিয়ে করেছে। পরিবারের অবাধ্য হওয়ায় সুচনার সঙ্গে তার পরিবারের কোনো সম্পর্ক নেই।

 

বাড়ির মালিকের ছোট ভাই মনির আহাম্মেদ  বলেন, ‘রমজানের কয়েকদিন আগে নিচতলায় ভাড়া নিয়ে সুচনা ও তার স্বামী বসবাস করে আসছিলেন। ঈদের কয়েকদিন আগে বাসায় তালা দিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজন চলে যান। ঈদের তৃতীয়দিন সুচনা একা বাসায় এসে ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেছে বলে দারোয়ান আমাদের জানায়।’

বাড়ির দারোয়ান মিন্টু মিয়া  বলেন, ‘সোমবার দুপুরের পর ঘরের সঙ্গে লাগোয়া ড্রেন পরিষ্কার করে পানি ছাড়ার জন্য ওই গৃহবধূকে আমি ডাকাডাকি করি। সাড়া না পেয়ে দরজায় গিয়ে অনেকক্ষণ কলিং বেল চাপি। এতেও শব্দ না পেয়ে জানালা দিয়ে মোবাইলের লাইট মেরে দেখি গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ। তাৎক্ষণিক আমি বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানিয়ে পুলিশে খবর দেই। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থৈয়াই অংপ্রু মারমা, ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রহীম সরকার ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল আলম এসে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

ঘটনাস্থলে থাকা এসআই সাইফুল আলম  বলেন, প্রাথমিকভাবে লোকমুখে ওই নবদম্পতির একাধিক বিয়ের খবর জানতে পেরেছি। পারিবারিক কলহের জের ধরে ওই নারী আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় তার মা মাহমুদা আক্তার মামলা করতে কিছুটা অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন।

ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুর রহীম সরকার বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূর মা মাহমুদা আক্তার থানায় এসেছেন। কথাবার্তা চলছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।