তিস্তাসহ আন্তঃসীমান্তবর্তী নদীর পানি বণ্টনে দ্রুত চুক্তি চায় ঢাকা

লেখক:
প্রকাশ: ১ বছর আগে

তিস্তা চুক্তিসহ অনিষ্পন্ন বিষয় নিষ্পত্তির জন্য ভারতের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। এছাড়াও সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশ-ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠকের বিষয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্র সচিব।

 

ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। ভারতের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা।

ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, তিস্তা ইস্যু নিয়ে অনেক আগে থেকেই ভারতের ফেডারেল ও স্টেট সরকারের মধ্যে সমস্যা রয়েছে। আমরা তিস্তার পানিবণ্টন ও কুশিয়ারা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।

তিনি বলেন, তিস্তাসহ সব আন্তঃসীমান্তবর্তী নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে দ্রুত চুক্তি সম্পাদনের ওপর গুরুত্ব পুনব্যর্ক্ত করি। বিষয়টি সমাধানের জন্য ভারতের নিবিড় সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছি। সেই সঙ্গে গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে সই করা চুক্তি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিতে ভারতকে বলেছি।

 

সচিব বলেন, এফওসিতে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, বাংলাদেশের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী ও গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু হিসেবে ভারতের কাছে যেসব অনিষ্পন্ন ইস্যু রয়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তির বিষয়ে তাদের সহায়তা কামনা করি। এ লক্ষে আমরা একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করি।

এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন মোমেন জানান, আদানির বিদ্যুৎ আনার বিষয়ে আলাদা করে আলাপ হয়নি। তবে বিদ্যুতের ট্রান্সমিশন লাইন নিয়ে আলাপ হয়েছে। তারা নেপাল-ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আনতে সহযোগিতা করবেন। তবে তারা বলেছেন, আমাদের ট্রান্সমিশন লাইনের ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে। আমরা এটা লাইন মিনিস্ট্রির সঙ্গে আলাপ করবো।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে ট্যারিফ বাধা দূর করতে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া সেপা চুক্তি দ্রুত করতে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি-বিএসএফের ভূমিকা বাড়ানো নিয়েও আলাপ হয়েছে। তাহলে সীমান্ত হত্যাও কমে আসবে।

মাসুদ বিন মোমেন আরও বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে বিদ্যমান সম্পর্কে নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দিয়েছেন।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় আসেন। ঢাকা সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ঢাকায় এফওসি বৈঠকে অংশ নেন বিনয় মোহন কোয়াত্রা। এর আগে ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি ভারতের নয়াদিল্লিতে এফওসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১ মে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই বিনয় মোহন কোয়াত্রার প্রথম বাংলাদেশ সফর।