হাতে লাল রঙয়ের টি-শার্ট দেখিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনা রুখে দিয়েছে তিন যুবক। শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার ও রাণীনগর স্টেশনের কেল্লাপাড়া রেলব্রিজ থেকে ১২০ ফুট দক্ষিণে ঘটনাটি ঘটে। রেলওয়ে লাইন ভাঙা দেখে লাল টি-শার্ট দেখিয়ে পাথরবাহী ট্রেনটি থামিয়ে দেন তিন যুবক। ফলে তিন যুবকের বুদ্ধিমত্তায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি।
পাথরবাহী ওই ট্রেনের চালক সুজাউদৌলা জানান, তিন যুবক লাল রঙয়ের গেঞ্জি দিয়ে ট্রেন থামানোর সংকেত দিচ্ছিলেন। লাল কাপড় দেখে তিনি ট্রেনটি গতিরোধ করে থাকিয়ে দেন। এ সময় তিনি নিচে নেমে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন সামনে রেললাইন ভাঙা রয়েছে। তাদের সাহসিকতা ও দূরদর্শিতায় দুর্ঘটনার কবল থেকে ট্রেনটি রক্ষা পায়।
সাহসী ওই তিন যুবক হলেন- উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের পাল্লাগ্রামের জবেদ প্রামানিকের ছেলে সারোয়ার, একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে রনি হোসেন ও আলমের ছেলে নাঈম হোসেন।
তারা জানান, প্রতিদিনের মতো তারা আজ বিকেলে রেললাইন ধরে হাঁটাহাটি করছিলেন। তারা কেল্লাপাড়া রেলব্রিজের দিকে যাওয়ার সময় দেখতে পান রেল লাইন ভাঙা। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই দেখেন সামনের দিক থেকে একটি ট্রেন চলে আসছে। তারা জানতেন, লাল কাপড় দেখালে ট্রেন থেমে যায়। কিন্তু লাল কাপড় না থাকলেও একজনের কাছে থাকা টি-শার্ট উঁচিয়ে ট্রেনটি দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হন।
স্থানীয় ইব্রাহীম, ওমর ফারুক ও লোকমান বলেন, এই লাইনে দুপুর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে। দুপুরের পর হঠাৎ এ ঘটনাটি ঘটে। তারা বলেন, এই তিন যুবক বিষয়টি না জানতে পারলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেত।
সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশনের পরিবহন পরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, পার্বতীপুর-খুলনা রেলপথের সান্তাহার জংশন স্টেশনের অদূরে কেল্লাপাড়া রেলব্রিজ এলাকায় আট ইঞ্চি রেললাইন ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের কাজ শুরু করা হয়। যে কারণে বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। লাইন মেরামতে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আবারো ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কাঁটা লাইনটি নাশকতামূলক কোনো ঘটনার ঘটানোর জন্য কেউ করেছে কি-না, জানতে চাইলে সান্তাহার রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন বলেন, রেললাইনের ওই অংশ অনেক পুরাতন হওয়ায় ওই স্থানে ভেঙে গেছে। খবর পেয়ে পিডব্লিউআই বিভাগ ওই অংশের রেল পরিবর্তন করেছেন।