তারাবি নামাজের নিয়ত দোয়া ও মুনাজাত

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

রমজানের রাতের নামাজকে তারাবিহ বলে। আর আরবিতে তারাবিহ (تَرَاوِيْح) শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘বিশ্রাম করা’। লম্বা কেরাতে প্রতি ৪ রাকাআত নামাজ পড়ার পর পর একটু বিশ্রাম গ্রহণ করার মাধ্যমে রাত জেগে যে নামাজ পড়া হয় মূলত তা হচ্ছে তারাবিহ নামাজ।

রাতের এ নামাজের রয়েছে অনেক ফজিলত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রাতের (তারাবিহ) নামাজ ঈমানের সঙ্গে সাওয়াবের নিয়তে পড়বে, তার জীবনের আগের সব গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়।’ সুবহানাল্লাহ!

হজরত সাঈর ইবনে ইয়াযিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের রাতের (তারাবিহতে) নামাজে শত শত (শ’-এর ওপর) আয়াত পড়তেন। ফলে সুদীর্ঘ সময় দাঁড়ানোর কারণে আমরা লাঠির ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম। (মুয়াত্তা মুহাম্মদ)

তারাবিহ নামাজের নিয়ত

নিয়ত আরবিতে করতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আরবি কিংবা বাংলায় নিয়ত করলে তা হয়ে যাবে।

তারাবিহ’র দুই রাকাআত নামাজ ক্বেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য (এ ইমামের পেছনে) পড়ছি- (اَللهُ اَكْبَر) আল্লাহু আকবার।

যেভাবে পড়বেন তারাবিহ

২ রাকাআত করে আলাদা নিয়তে ৪ রাকাআত নামাজ পড়া। ৪ রাকাআত পড়ার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়া। সেসময় তাসবিহ-তাহলিল, তাওবা-ইসতেগফার পড়া। গোনাহ মাফে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা।

খানিক বিশ্রামের পর আবার ২/২ রাকাআত করে ৪ রাকাআত নামাজ আদায় করা। আবার কিছু বিশ্রাম করে আবার নামাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা।

 

প্রত্যেক ৪ রাকাআত নামাজ পড়ার পর বিশ্রামের সময় অনেকেই আল্লাহর কাছে দোয়া করে থাকেন। অনেকে মুনাজাতও করে থাকেন। প্রতি ৪ রাকাতে মুনাজাত না করে একেবারে শেষে করলেও কোনো সমস্যা নেই।

তারাবিহ নামাজের দোয়া

তারাবিহ নামাজের পর মুনাজাতের জন্য নির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। তবে গোনাহমুক্ত জীবন লাভে তাওবা-ইসতেগফারের বিকল্প নেই।

তবে আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত একটি দোয়া রয়েছে, যা তারাবিহ নামাজে পড়া হয়। আর এ দোয়াটি ব্যাপকভাবে পড়ার কারণে অনেক মানুষই তা মুখস্ত জানে। চাইলে এ দোয়াটিও প্রতি ৪ রাকাআত পর পর পড়া যেতে পারে। আর তাহলো-

سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ

উচ্চারণ : ‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’

 

তারাবিহ নামাজের ৪ রাকাআত পর পর শুধু এ দোয়াটিই পড়তে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যে কোনো দোয়া-ই পড়া যেতে পারে। এতে তারাবিহ নামাজেরও কোনো অসুবিধা হবে না।

তারাবিহ শেষে মুনাজাত

আবার তারাবিহ নামাজ শেষ হলেও সবাই সমবেতভাবে মুনাজাত করে। আবার অনেকে একাকি মুনাজাত করে। এ মুনাজাত সমবেত হোক আর একাকি হোক যে কোনো দোয়া দিয়ে তা করা যেতে পারে।
মনের একান্ত কথাগুলো যেভাবে ইচ্ছা আল্লাহর কাছে তুলে ধরায় কোনো অসুবিধা নেই। তবে তারাবিহ নামাজের দোয়ার মতো মুনাজাতেরও একটি ব্যাপক প্রচলিত দোয়া রয়েছে। ইচ্ছা করলে এ দোয়াটিও পড়া যায়। আর তাহলো-

اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’

 

– অনেকে রমজানজুড়ে এ দোয়াও বেশি বেশি পড়ে থাকেন-

اَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇﻧَّﻚَ ﻋَﻔُﻮٌّ ﺗُﺤِﺐُّ اﻟْﻌَﻔْﻮَ ﻓَﺎﻋْﻒُ ﻋَﻨِّﻲ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আ’ন্নি।

– তাছাড়া তারাবিহ নামাজের পর সাইয়্যিদুল ইসতেগফারও পড়া যেতে পারে-

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্বতানি; ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আ’হদিকা ওয়া ওয়া’দিকা মাসতাত্বা’তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানা’তু আবুউলাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়া; ওয়া আবুউ বিজামবি ফাগফিরলি ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।’

 

মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহাঅনুগ্রহের মাস রমজান। এ মাসের মর্যাদা অন্য মাসের তুলনায় অনেক বেশি। এ মাসের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত হলো কিয়ামুর রমজান তথা তারাবিহ নামাজ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে তারাবিহ নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। রাতের নামাজ (তারাবিহ) আদায়েল মাধ্যমে বিগত জীবনের সব গোনাহ থেকে মুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

জাতীয়দূর্ঘটনাপ্রচ্ছদ এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথমেই স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন।তিনি বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রদানের জন্য বৃহৎ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এজন্য চাই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। স্বাস্থ্য খাতে কোনো প্রকার অনিয়ম দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। এ লক্ষ্যে কমিটির সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে।শনিবার পিরোজপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন।সভায় পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম, পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ফারুক আলম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হক, ইউএনও সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবু, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভীর সিকদার, ওসি মো. কামরুজ্জামান তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য দেন।এর আগে মন্ত্রী স্বরূপকাঠি পৌর গোরস্থান ও শ্মশান ঘাটের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন শেষে পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে যোগ দেন।সেখানে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয় এমন কোন কাজ না করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।পরে মন্ত্রী জাতীয় সমবায় দিবসের র‌্যালিতে অংশ গ্রহণ করেন। সব শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘দলে থাকবেন আর দলের সিদ্ধান্ত বিরোধী কাজ করবেন, তা হবে না। অনুপ্রবেশকারীকে দলে স্থান দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনা রাত-দিন পরিশ্রম করে দেশের উন্নয়ন করে চলছেন। এ ধারা অব্যহত রাখতে আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে হবে।’
৫ years ago