সবার শেষে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আলোচনায় থাকা তামিম ইকবালকে ছাড়া ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি। সাামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিও প্রকাশ করে স্কোয়াড দিয়েছে তারা। বিশ্বকাপ দলে যারা আছেন তাদের হাতে জার্সি তুলে দিয়ে স্কোয়াড ঘোষণায় ভিন্নতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত (সহ অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাওহীদ হৃদয়, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, নাসুম আহমেদ, শেখ মাহেদী হাসান, তানজিম হাসান সাকিব ও তানজিদ হাসান তামিম।
সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম নিজের পঞ্চম ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায়। ২০০৭ সালে তাদের বিশ্বকাপের সফর শুরু হয়েছিল। এরপর ২০১১, ২০১৫, ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন দুজন। এবার খেলতে যাচ্ছে ২০২৩ বিশ্বকাপ। মাহমুদউল্লাহও এই দলে অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছেন। ২০১১ বিশ্বকাপ খেলেছেন তিনি। ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি তুলে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করার অনন্য রেকর্ড গড়েন তিনি। পরের ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন তিনি।২০১৯ বিশ্বকাপেও ছিলেন লেট অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। তবে এবার তাকে পাওয়া নিয়ে ছিল ধোঁয়াশা। কিন্তু শেষমেশ সাকিবের দলে জায়গা হয়ে যায় তার।
তামিম ইকবাল হতে পারতেন এই দলের আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। কিন্তু নিজের পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ হলো না তার। বিশ্বকাপ স্কোয়াডে না থাকার পেছনে বড় কারণ তার ফিটনেস। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডের পর নিজের ফিটনেস নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এরপর ফিজিও মেডিকেল বিভাগকে নিজের অবস্থান জানিয়েছিলেন। সঙ্গে যোগ করেছিলেন, ‘আগেও বলেছি, এখনও জড়তা আছে। জড়তা থাকবেও। কিন্তু এটা কিভাবে ওভারকাম করবো সেই প্রশ্নের উত্তর আমাদের মেলাতে হবে।’
এই স্কোয়াডের ৬ ক্রিকেটার চার বছর আগে ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলেছেন। সাকিব ও মুশফিকের সঙ্গে রয়েছেন লিটন দাস, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাই অভিজ্ঞতার বিবেচনায় এই দলকে পিছিয়ে রাখা যাবে না কোনোভাবেই। তাসকিন আহমেদ ২০১৫ বিশ্বকাপের পর আরেকটি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন। এছাড়া প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলার রোমাঞ্চে ডুবে আছেন তানজিম হাসান সাকিব, তানজিদ হাসান তামিম, শেখ মাহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, তাওহীদ হৃদয়, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। সাকিবের ডেপুটি হিসেবে শান্তকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিশ্বকাপে।
বাংলাদেশ ৬ ভেন্যুতে খেলবে বিশ্বকাপের ৯ ম্যাচ। দুটি করে ম্যাচ আছে ধর্মশালা, পুনে ও কলকাতায়। এছাড়া চেন্নাই, মুম্বাই ও দিল্লিতে অপর তিন ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পথ চলা শুরু হবে ৭ অক্টোবর। ধর্মশালায় বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। একই মাঠে তিনদিন পর ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এরপর ধারাবাহিকভাবে বিশ্বকাপের বাকি খেলবে সাকিবরা।
ধর্মশালা বাদে সব ধরণের কন্ডিশনই প্রায় বাংলাদেশের কাছাকাছি। ধর্মশালায় অক্টোবরের শুরুতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা থাকবে। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওই কন্ডিশনে বাংলাদেশ একাধিক ম্যাচ খেলেছিল।
বাংলাদেশ এবার প্রথমবারের মতো পুনেতে খেলবে। এছাড়া মুম্বাই ও চেন্নাইয়ে খেলেছিল সেই ১৯৯৮ সালে। কলকাতা ও দিল্লিতে খেলার অভিজ্ঞতা আছে এই দলের ক্রিকেটারদের যা নিশ্চিতভাবেই বাড়তি আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে।
১৫৫ পয়েন্ট নিয়ে আইসিসি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ সুপার লিগে তিনে থেকে শেষ করে বাংলাদেশ। সমান পয়েন্ট বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডেরও। কেবল নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় তারা দুইয়ে। ১৭৫ পয়েন্ট নিয়ে নিউ জিল্যান্ড শীর্ষে।