তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবন

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রচণ্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তাপও বাড়তে থাকে। তাপপ্রবাহের কারণে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এর মধ্যে, ঈদের কেনাকাটা করতে গিয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

কৃষকরা জানান, প্রচণ্ড খরার কারণে প্রতিদিন ধানক্ষেতে পানি দিতে হয়, যা ঠিকমতো দিতে পারছেন না। দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকলে অসুস্থ হওয়ার উপক্রম।

 

সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে, দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সরেজমিন শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গেছে, সূর্যের প্রখর তাপে সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শ্রমিক, দিনমজুর মানুষের ঘরের বাইরে বের হয়ে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এরপরও খেটে খাওয়া মানুষজন জীবিকার তাগিদে ও জরুরি প্রয়োজনে তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন। অনেক পথচারী ছাতা মাথায় দিয়ে চলাচল করছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার রেলবাগান এলাকার রিকশাচালক আবুল হাশেম বলেন, ‘তীব্র রোদের কারণে গরমে রাস্তায় যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষও জরুরি কাজ ছাড়া বাড়ির বাহিরে বের হচ্ছে না। কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এ অবস্থা থাকলে রিকশা চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। সব মিলিয়ে এই তাপমাত্রার কারণে মানুষ ভালো নাই বলা চলে।’

 

শিবগঞ্জ উপজেলার ঘুঘুডাংগা গ্রামের কৃষক বদিউর রহমান বলেন, ‘প্রচণ্ড খরার কারণে প্রতিদিন ধানক্ষেতে পানি দিতে হয়। এ সময় জমিতে ঠিকমতো পানি না দিলে ধানে চিটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। একদিকে এতো রোদ, আরেক দিকে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি নাই। যে কারণে আম ও লিচুর গুটি ঝরে যাচ্ছে। গরম সহ্য করতে না পেরে শিশুসহ সব বয়সীরা দিনে দুই থেকে তিনবার গোসল করছে।’

উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাপপ্রবাহের কারণে ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বোরো ধানে কীটনাশক বা (তাপজনিত ক্ষতি) গরম বাতাস প্রবাহিত হলে ধানে চিটা হতে পারে, যে কারণে জমিতে তিন ইঞ্চি পানি ধরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, ফল ও সবজি চারা তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষার জন্য মালচিং ও সেচ নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, জেলার উপর দিয়ে মৃদু তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে। ফলে অনেকই ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘কিছুদিন আগেও হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম ছিল। তাপমাত্রা বাড়ার কারণে রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।’