বরিশালের ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট তপন কুমার চক্রবর্তী ও তার মা শহীদ জায়া ঊষা চক্রবর্তীর নাম রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় মুক্তযোদ্ধা ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তপন কুমার চক্রবর্তীর মেয়ে ডা. মনিষা চক্রবর্তী।
সোমবার সন্ধ্যায় লাইভে এসে ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, তার বাবা মেজর জলিলের অধীনে ৯ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি সুপরিচিত। এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাধারণ সম্পাদকসহ নেতারা তাকে ভালোভাবেই চেনেন। তার দাদী স্বামীকে হারিয়েছেন ১৯৭১ সালের ১২ অগাস্ট, সেদিন তার দাদা সুধীর কুমার চক্রবর্তীকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী।
“(অথচ সরকার) তাদেরকে মূল্যায়ন করলেন রাজাকারের তালিকায় নাম দিয়ে। বিষয়টি অবিশ্বাসযোগ্য। এমন একজনের নাম যে রাজাকারের তালিকায় দেওয়া যেতে পারে- এটা না হলে এই প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করতাম না। এর মধ্য দিয়ে শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপমান করা হয়েছে।”
পরে লাইভে তপন কুমার চক্রবর্তীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিপত্র ও সম্মানী ভাতা নেওয়ার দলিল তুলে ধরেন মনীষা।
এ প্রসঙ্গে মনীষা চক্রবর্তী সমকালকে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই বিষ্ময়কর। কারণ, আমাদের পরিবার স্বাধীনতার বহু আগে থেকেই প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমার ঠাকুরদাকে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করার কারণে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকারেরা নির্মমভাবে হত্যা করে। আমার বাবা সরাসরি মুক্তিুযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা। এরকম একটি পরিবারকে রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা অবশ্যই নিন্দনীয় এবং ষড়যন্ত্র। এর সঙ্গে যে চক্র জড়িত তাদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হোক।’
পেশায় আইনজীবী তপন কুমার চক্রবর্তী পরিবার নিয়ে বসবাস করেন বরিশাল নগরীর শ্রীনাথ চ্যাটার্জী লেন এলাকায়। তার মেয়ে মনীষা গেল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে বাসদের হয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন।