তনু হত্যার ২১ মাস; সন্দেহভাজনদের গ্রেফতারের দাবি পরিবারের

:
: ৭ years ago

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী নিহত সোহাগী জাহান তনুর খুনিরা ২১ মাসেও শনাক্ত হয়নি। দীর্ঘ এ সময়ে মামলার দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই। খুনি চিহ্নিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তনুর পরিবার ও কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা। তনুর পরিবার সন্দেহভাজন আসামিদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছেন।

তনুর পরিবারের সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফিরেনি তনু। পরে তার স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভেতর একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ পায়। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

থানা পুলিশ ও ডিবি’র পর গত বছরের পয়লা এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। গত বছরের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রানু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা- এ নিয়েও সিআইডি বিস্তারিত কিছু বলছে না। সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে চলতি বছরের ২৫ অক্টোর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা তনুর মায়ের সন্দেহ করা আসামি বলেও সিআইডি জানায়। তবে তাদের নাম জানানো হয়নি।

এদিকে সর্বশেষ ২২ নভেম্বর ঢাকা সিআইডি কার্যালয়ে বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম, চাচাতো বোন লাইজু ও চাচাতো ভাই মিনহাজকে দিনভর পুরানো বিষয়গুলো জিজ্ঞেস করেন ঢাকা সিআইডির কর্মকর্তারা।

গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার সংগঠক খায়রুল আলম রায়হান জানান,‘দীর্ঘদিন তনু হত্যার মামলাটি সিআইডিতে পড়ে আছে। মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। সিআইডির নিকট মামলা যাওয়া মানে হিমাগারে রেখে দেওয়া।’

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘সার্জেন্ট জাহিদ ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকারী কে জানা যাবে। কারণ তাদের বাসায় টিউশনি করতে যাওয়ার পর জঙ্গলে তনুর মরদেহ পাওয়া যায়।’ ঢাকায় তিনি সিআইডির নিকট এ দাবি জানিয়েছেন বলেও জানান। তিনি আরো বলেন, ‘মেয়েকে ফিরে পাবো না জানি, তবে তনুর হত্যাকারীদের বিচার চাই। তার মতো কোনো মায়ের বুক যেন আর খালি না হয়।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেছেন, ‘তনু হত্যার সাথে জড়িত অপরাধীদের শনাক্ত করতে সিআইডি কাজ করছে।’ সার্জেন্ট জাহিদ ও তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে বলেন,‘আমরা আইন অনুযায়ী কাজ করছি।’