ঢাবির ৯৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৯৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

এ উপলক্ষে ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় মনোরম সাজে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচির মধ্যে পতাকা উত্তোলন, পায়রা ওড়ানো, কেক কাটা, উদ্বোধন সঙ্গীত, শোভাযাত্রা, গবেষণা ও আবিস্কার বিষয়ক প্রদর্শনী, চিত্রকর্ম প্রদর্শনীসহ ছিল নানা আয়োজন।

রোববার সকাল ১০টায় প্রশাসনিক ভবনসংলগ্ন মল চত্বরে জাতীয় পতাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর হলগুলোতে পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত ও উদ্বোধন সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

এর আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শোভাযাত্রাসহ প্রশাসনিক ভবনসংলগ্ন মলে জমায়েত হন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।

শোভাযাত্রা শেষে সকাল ১১টায় টিএসসি মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এনামউজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দীন, ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম প্রমুখ।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আক্ষেপ করে বলেন, ছাত্র আন্দোলনের যে গৌরব পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ছিল, সেটা আমরা হারিয়ে ফেললাম কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলার জন্য যে সুনাম ছিল, সেই শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে গেল কেন? সবাই মিলে চিন্তা করব বিশ্ববিদ্যালয়কে আমাদের কী দেওয়ার আছে, এর গৌরব বৃদ্ধিতে কী ভূমিকা পালন করার আছ।

বিশ্বিবদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাবি উপাচার্য আখতারুজ্জামান-

 

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের গৌরব। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে এই বিশ্ববিদ্যালয় যে বৃহৎ ভূমিকা পালন করছে, সেটি যাতে অব্যাহত থাকে- তার জন্য আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ, জ্ঞানচর্চা তথা এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এখান থেকেই সৃষ্টি হয়েছে অনেক স্বনামধন্য গবেষক, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ ও মনীষীর। তিনি শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবার গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করছে।

এ. কে. আজাদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকেরই কর্মসংস্থান হয় না। আমি যদি উপাচার্যকে বিসিএসের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখাই, তাহলে তিনি কষ্ট পাবেন। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান এতটাই কমে গেছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বাড়ানোর তাগিদ দেন।

আলোচনা সভা শুরুর আগে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে তৈরি করা 100yrs.du.ac.bd নামে একটি ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে দুর্লভ পাণ্ডুলিপি প্রদর্শনী, কার্জন হলে বায়োমেডিকেল ফিজিপ অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের উদ্ভাবিত চিকিৎসা প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি ও গবেষণা প্রদর্শনী, ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির উদ্যোগে বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বাংলা বিভাগের উদ্যোগে নাটমণ্ডলে ‘হরপ্রসাদ-শহীদুল্লাহ্‌ স্মারক বক্তৃতা’, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, চীনের ইউনান বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ও শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও হল দিনব্যাপী নিজস্ব কর্মসূচি গ্রহণ করে।