ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদুল্লাহ হল এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলীগ। সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হলের বাইরের সড়কে অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল ছুড়ছেন। অন্যদিকে হলের ভেতর অবস্থান করে আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল ছুড়ছেন। এ সময় ওই এলাকায় অন্তত দুটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। তবে কারা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, তা জানা যায়নি।
এ ছাড়াও, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এলাকায়ও সংঘর্ষ চলছে। এদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে মারধরের শিকার হয়ে আন্দোলনকারীরা ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসা নিতে যান। এ সময় তাদের জরুরি বিভাগ থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা— এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এরপর কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সংগঠিত হয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেন। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শহীদুল্লাহ হলের পাশ থেকে আন্দোলনকারীদেরও ধাওয়া করেন। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অন্য অংশে এখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছেন। আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছেন। তবে, শহীদুল্লাহ হল এলাকায় সংঘর্ষ চলছে। হলের ছাদ থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হচ্ছে। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সেখানে পুলিশ সদস্যরা আসেন।
এদিকে, হামলায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন জানিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী’ ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ গণমাধ্যমকে জানান, সংঘর্ষে প্রায় দুই শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া অনেকেই বিভিন্ন হলে আটকে আছেন।
আহত হয়ে ২২০ জন ঢামেকে
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের চলমান সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত প্রায় ২২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য এসেছেন। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঢামেকের ইমার্জেন্সি টিকিট কাউন্টার থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
টিকিট কাউন্টারের ইনচার্জ মেহেদী বলেন, এখন পর্যন্ত ২২০ এর মতো আহত শিক্ষার্থী টিকিট কেটেছে চিকিৎসার জন্য। এখনো আহত শিক্ষার্থীরা আসছেন।
ঢামেকের ইমার্জেন্সি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নাফিজ বিশ্বাস বলেন, প্রচুর আহত শিক্ষার্থী আসছেন। বিভিন্ন রুমে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে। এখন পর্যন্ত টোটাল হিসাব করা হয়নি। তবে ২০০ এর ওপর শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছেন।