ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু সড়ক যানজটমুক্ত রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

ঈদসহ বিভিন্ন উৎসব ঘিরে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। কিন্তু চিরচেনা সেই দুর্ভোগ চোখে পড়েনি গত ঈদে। তবে আসন্ন ঈদে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ক নিয়ে শঙ্কা রয়েছে পরিবহন চালক ও সংশ্লিষ্টদের।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে কালিহাতীর এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এই অংশের সবগুলো উড়াল সড়ক (ফ্লাইওভার) চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। তাই মহাসড়কের এ অংশে নির্বিঘ্নে যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতা থাকছে না।

 

জেলা পুলিশ বিভাগ সূত্র জানায, গত রোজার ঈদের সময় এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত দুই লেনের সড়ক একমুখী (ওয়ানওয়ে) করে দেয়া হয়। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন এলেঙ্গা থেকে সেতুর দিকে যায়। অপরদিকে, উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকামুখী যানবাহন সেতু পার হয়ে ভূঞাপুর সড়ক হয়ে এলেঙ্গা পর্যন্ত আসার ব্যবস্থা করা হয়। এতে ভালো ফল পাওয়া গেছে। অনেক বছর পর গত ঈদে এই মহাসড়কে তেমন যানজট হয়নি। এবার মহাসড়কের এই অংশটুকু সাধারণ যানবাহনের একমুখী করা হচ্ছে। তবে উত্তরবঙ্গ থেকে গরুবাহী ট্রাক একমুখী সড়কের আওতায় বাইরে থাকবে। তাছাড়াও ঈদের ছুটি কম হওয়ায় একসঙ্গে যানবাহনের চাপ বেশি হওয়ার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।

পুলিশ, পরিবহন চালক এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যানবাহন এখন কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন সড়কের কারণে দ্রুত চলে আসতে পারে। এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত দুই লেনের সড়ক। আর সেতুটিও দুই লেনের। যানবাহন চার লেনের সুবিধায় দ্রুত এলেঙ্গা পর্যন্ত এসে আটকে যায় দুই লেনের মুখে। এছাড়াও সেতু টোল দিতে গিয়েও যানজট লেগে যায়। এ কারণে ঈদে এ সড়কে যানজট হয়ে থাকে।

বঙ্গবন্ধু সেতু টোল প্লাজা সূত্র জানায়, স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ১৪/১৫ হাজার যানবাহন সেতু পারাপার হয়। ঈদের আগে দু-একদিন যানবাহন পারাপার হয় ৩০ হাজারের উপরে। স্বাভাবিকের অধিক যানবাহন রাস্তায় থাকায় দুই লেনের সড়কে যানজট লেগে যায়। তাছাড়াও সেতুর পশ্চিম প্রান্তে (সিরাজগঞ্জ অংশে) যানজট লেগে সেতু অতিক্রম করে টাঙ্গাইল অংশ পর্যন্ত চলে আসে।

 

মহাসড়কের মির্জাপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চার লেন সড়ক এবং সড়কের দুই পাশে সার্ভিস লেন সব চালু আছে। দ্রুত গতিতে চলছে যানবাহন। সড়কে কোনো সমস্যা নেই। এলেঙ্গা মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক সম্প্রসারণও করা হয়েছে।

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, গত রোজার ঈদে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত দুই লেনের সড়কটি ওয়ানওয়ে করায় ভালো ফল পাওয়া গেছে। এবারও পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। যানজটমুক্ত রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। আগামী ৭ ও ৮ জুলাই ঢাকা ও গাজীপুর এলাকার পোশাক কারখানাগুলো ছুটি হবে, তখন মহাসড়কের যানবাহনের চাপ বাড়বে বলে তিনি জানান।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, গত ঈদের মতো এবারও যানজটমুক্ত ঈদ উপহার দেয়ার লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। উত্তরাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস সেতু পূর্ব পাড় গোলচক্কর থেকে ভূঞাপুর হয়ে এলেঙ্গা দিয়ে যাতায়াত করবে। আর গরুবাহী যানবাহন ও উত্তরাঞ্চলগামী যাত্রীবাহী বাস মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করবে।

 

তিনি আরও বলেন, মহাসড়কে ৬২০ জন পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও ১০০ জন এপিবিএন সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন যাতে দ্রুত সরিয়ে ফেলা যায়, এ জন্য হাইওয়ে পুলিশ ও সেতু কর্তৃপক্ষের চারটি রেকার সবসময় প্রস্তুত থাকবে। সড়ক পর্যবেক্ষণের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। সেখান থেকে সড়কের বিভিন্ন জায়গা মনিটরিং করা হবে। কোথাও কোনো সমস্যা দেখলেই তাৎক্ষণিক তা সমাধান করা হবে।