ড্রাফটে দল না পাওয়া মুনিমের ব্যাটে বিধ্বংসী ইনিংস

:
: ২ years ago

সোহাগ গাজীর বলটা জায়গা থেকে সরে গিয়ে ফাইন লেগের ওপর দিয়ে মারলেন মুনিম শাহরিয়ার। খুব পছন্দের একটি স্কোরিং শট তার। বলটা অলোক কাপালির নাগালের বাইরে দিয়ে চলে গেল সীমানায়।

৪৭ থেকে ফরচুন বরিশালের ওপেনারের রান পৌঁছে গেল ফিফটিতে। চোখের পলকে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। সেটাও বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলে। ২৬ বলে বিপিএলের প্রথম ফিফটি পেয়েছেন। এজন্য ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ।

 

বিপিএলের শুরু থেকেই বরিশালের ওপেনিং ছিল মাথা ব্যথার কারণ। নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৈকত আলীকে দিয়ে টানা চার ম্যাচ ইনিংস উদ্বোধন করালেও তারা ভালো করতে পারেননি। এরপর বিদেশি জ্যাক লিনটটকেও নামান সাকিব। তাতেও তাদের ভাগ্য ফেরেনি।

দুই ম্যাচ আগে ড্রাফটের বাইরে থেকে নেওয়া মুনিমকে প্রথম মাঠে নামায় বরিশাল। কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের দল ঢাকা আবাহনীর হয়ে আগে খেলেছেন তিনি। সেখানে ১৪ ম্যাচে ২ ফিফটিতে ৩৫৫ রান করেছিলেন ১৪৩.১৪ স্ট্রাইক রেটে। কোচের মন জয় করা মুনিমের বিপিএলের শুরুটা ভালো ছিল না। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ১ রানে থেমেছিল তার ইনিংস।

সিলেটে এসেই নিজের প্রতিভা, সামর্থ্য মেলে ধরা শুরু করেন ডানহাতি ওপেনার। গতকাল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ঝকঝকে ৪৫ রানের পর আজ ২৮ বলে করেন ৫১ রান। অসাধারণ এই ইনিংসে ছিল রান পাওয়ার তীব্র ক্ষুধা, অদম্য সাহসিকতা ও নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা।

 

শুরু থেকেই মুনিম ছিলেন মারমুখী। তবে ভাগ্যকে পাশে পেয়েছেন প্রথম বলেই। সোহাগ গাজীর বলে স্লিপে ক্যাচ দেন। কিন্তু মিঠুন হাতে জমাতে পারেনি। বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। ওই ওভারে ফাইন লেগ ও লং অফ দিয়ে ছক্কা হাঁকান। পরের ওভারে পেসার সিরাজ আহমেদকে ড্রাইভ করে দারুণ চার মারেন। ব্যাটিংয়ের সেই ধারাবাহিকতা থাকে পরবর্তীতেও। পেসার স্বাধীন ও সিরাজকে লং অন ও অফ দিয়ে উড়ান ছক্কায়। স্বাধীনকে উইকেটে টিকতে দেননি। পঞ্চম ওভারে মিড উইকেট ও ফাইন লেগ দিয়ে দুটি চার মারেন চোখের পলকে।

ফিফটির পর ইনিংসটি বড় করতে পারেননি। সোহাগ গাজীর বলে লং অফে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দিয়ে থামেন ৫১ রানে। ড্রাফটে মুনিমকে দলে নিতে আগ্রহ দেখায়নি ছয় দলের কেউ। ড্রাফটের পর খালেদ মাহমুদ সুজন তাকে নেয়। তবে বরিশাল শিবিরে যোগ দেওয়ার পর তার কোভিড ধরা পড়ে। এজন্য সপ্তাহখানেক মাঠের বাইরে থাকতে হয়।

ফিরে এসে মুনিম ছড়াচ্ছেন মুগ্ধতা। ছড়িয়ে দিচ্ছেন নিজের আগামণী বার্তা। বড় শট খেলার সাহস, প্রতি আক্রমণে বোলিং এলোমেলো করে দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে তার। নিজেকে আরেকধাপ এগিয়ে নিতে মুনিমের আরো ধারাবাহিক হতে হবে, হতে হবে বিধ্বংসী। বিপিএল যেভাবে শুরু করেছেন সেভাবে শেষ করতে পারলেই পৌঁছে যাবেন অভীষ্ট লক্ষ্যে।