ডোকলামে স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হলেও সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীনের সম্পর্কে টানাপড়েন রয়েই গেছে। ভারতের অরুণাচল প্রদেশ সংলগ্ন তিব্বত সীমান্তে বসবাসকারী এক দল চীনা পশুপালকের উদ্দেশে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং-এর লেখা চিঠিতেই সেই ইঙ্গিত মিলছে।
আবার ভারতও চীন সীমান্তে সামরিক প্রস্তুতি নিতে পিছিয়ে নেই। লাদাখে লিনচে নদীর উপরে একটি সেতুর উদ্বোধনের পিছনে নয়াদিল্লির সেই ভাবনাই স্পষ্ট হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ডোকলাম নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই ব্রহ্মপুত্র নদ নিয়ে ভারতকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করেছিল বেইজিং। সীমান্ত বিবাদ কেটে গেলেও বেইজিং-এর সেই মনোভাব বদলায়নি। আন্তর্জাতিক চুক্তি মেনেই ভারত ও বাংলাদেশকে ব্রহ্মপুত্রের পানি সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার কথা বেইজিং-এর। কিন্তু বাংলাদেশ সেই তথ্য পেলেও ভারতকে তা দেওয়া হচ্ছে না। নানা টালবাহানা চালিয়ে যাচ্ছে চীন। এ নিয়ে ভারতীয় কূটনীতিকদের ক্ষোভ যখন বেড়ে চলেছে, তার মধ্যেই ভারত সীমান্তে টানাপড়েনকে ইঙ্গিত করে শি জিন পিং-এর নতুন মন্তব্য সামনে এসেছে।
চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জিন হুয়া জানিয়েছে, তিব্বতের লুনজের একটি পশুপালক পরিবারকে সম্প্রতি চিঠি লিখেছেন শি জিন পিং।
অরুণাচল সীমান্ত লাগোয়া তিব্বতে বসবাসকারী এই পশুপালকদের উদ্দেশে শি বলেন, ‘‘আপনারা ওই এলাকায় শিকড় ছড়িয়ে দিন। চীনের জমিকে রক্ষা করুন। ’’ সীমান্ত এলাকায় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পশুপালকদের অবদানেরও স্বীকৃতি দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। পরিবারটি যাতে সীমান্ত এলাকায় বসবাস করতে অন্য পশুপালকদেরও উৎসাহ দেয়, সে জন্যও বলেছেন শি। জইগার ও ইয়াংজম নামে দু’টি মেয়ে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস চলাকালীন শি-কে চিঠি লিখেছিল। সীমান্ত নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিল চীনা প্রেসিডেন্টকে। তারই জবাব দিয়েছেন শি।
পাশাপাশি, চীন সীমান্তে নিরাপত্তার যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে ভারত। লাদাখে চীনের সঙ্গে ‘এলএসি’ বরাবর ভারতের ‘বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন’ নতুন একটি সেতুর উদ্বোধন করেছে। লেহ-লোমা-র পথে এই সেতু সাধারণ মানুষের স্বার্থ দেখবে, তেমনি সামরিক প্রয়োজনেও এটি কাজে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। ওই সংস্থার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, লাদাখে উন্নয়ন ও সামরিক স্বার্থের দিকে তাকিয়ে প্রজেক্ট হিমাঙ্ক-এর রূপায়ণ করা হচ্ছে। চীন সীমান্তে যোগাযোগের জন্য এ মাসে তৃতীয় সেতুর উদ্বোধন হলো।