 
     জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে রিট আবেদন করা হয়েছে। আগামী রোববার এর শুনানি হতে পারে। এই রিট দরখাস্তের অনুলিপি আজ দুপুরেই নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে রিট আবেদন করা হয়েছে। আগামী রোববার এর শুনানি হতে পারে। এই রিট দরখাস্তের অনুলিপি আজ দুপুরেই নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে ডিভিশন বেঞ্চে আজ সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে উল্লিখিত বিষয়ে রিট দায়েরের জন্য হলফনামা সম্পাদনের অনুমতি দেন।
রিট আবেদনকারী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুর রহমান আজ সন্ধ্যায় বলেন, ‘আদালতের অনুমতি নিয়ে আমরা আজ রিট দরখাস্ত দাখিল করেছি। আগামী রোববার এর ওপর শুনানি হতে পারে। আমরা নির্বাচন বন্ধ বা স্থগিতের জন্য কোনো প্রতিকার দাবি করিনি। আমরা বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের পরিবর্তে ইসির আওতাভুক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে প্রতিস্থাপন চেয়েছি। কারণ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন পরিচালনায় নিরপেক্ষ ও স্বাধীন লোকবল দরকার।
সংগ্রহে থাকা ওই রিটের অনুলিপি থেকে দেখা যায়, সেখানে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে জেলা প্রশাসকেরা নির্বাচন পরিচালনাকারী হতে পারেন না। কারণ সাংবিধানিক বাধা আছে। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে।’ আর ডেপুটি কমিশনারগণ প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী বিভাগে কর্মরত আছেন। তাই তাঁরা নিজেরা সরাসরি নির্বাচন পরিচালক হতে পারবেন না। তাঁরা সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারেন।
দরখাস্তে আরও যুক্তি দেওয়া হয়, ডিসিদের দায়িত্ব পালনের কারণে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের ৪ দফার ব্যত্যয় ঘটবে। কারণ এতে বলা আছে, ‘নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হইবেন।’ কিন্তু বাস্তবে রিটার্নিং কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করেন।
রিট দরখাস্তে বলা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৭ অনুচ্ছেদের ৪ দফায় বলা আছে, রিটার্নিং কর্মকর্তাগণ নির্বাচন পরিচালনা করবেন। কিন্তু ডিসিদের দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা সংবিধান সমর্থন করে না।
রিটের দরখাস্তে এর সপক্ষে সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদের বিধান স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদ বলেছে, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত সকল নির্বাহী ও বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের সহায়তা করিবেন।’ একইভাবে নির্বাচন কার্যে নির্বাচন কমিশনের সহায়তা করাই প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ ঠিক সে কথাই বলেছে।
উল্লেখ্য, রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নিজস্ব কর্মকর্তারা রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের একজনকেও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা পদে সারা দেশে মাত্র একজন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। রিটের দরখাস্তে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা পদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সরিয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের বসানোর প্রতিকারও আশা করা হয়েছে।
মার্কিন নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা এনডিআই সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে অবাধ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন পরিচালনায় যথাসম্ভব কম সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগে সুপারিশ করেছিল। এর আগে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তারাই নির্বাচন পরিচালনা করে সাফল্যের নজির তৈরি করেন।
আজ যোগাযোগ করা হলে নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এম এম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘উল্লিখিত রিট দাখিলের বিষয়টি এখনো আমার নজরে আসেনি।’
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com