ডিজিটাল বৈষম্য চাইনা

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

বেলায়েত বাবলু:: করোনার প্রাদূর্ভাব বেড়ে যাওয়ার পরেও সীমিত পরিসরে অথবা আকারের কথা বলে সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। চলছে অফিস আদালত। করোনা রোগী সনাক্তের পরেও লকডাউনের বিষয়টি যেন বন্ধ হয়ে গেছে। তাই করোনা পজেটিভ হয়েও মানুষ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করছে। কোন ধরনের স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই মানুষ ছুটছে একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। তাই প্রতিদিনকার স্বাস্থ্য বার্তায় আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার খবরই পাচ্ছি। কিন্তু এ বার্তা কাউকে ঘর বন্দি করতে পারছেনা। কাজের লোক গুলো যেমন জীবিকার তাগিদায় বাইরে বের হচ্ছেন আবার অকর্মা মানুষগুলোও কারণ ছাড়াই বাইরে বের হচ্ছে।

এদিকে ৩১ মে এস. এস. সি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলেও একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরী হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আপাতত বন্ধ থাকলেও অফিস কক্ষ খোলা হবে বলে শুনেছি। তবে জেনেছি বাসায় বসে শিশুদের পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা চলছে। সেক্ষেত্রে এতোদিন অনলাইনে যে ক্লাস নেয়া হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে। এনিয়েই প্রশ্ন উঠা শুরু হয়েছে। কারণ অনলাইনে যে ক্লাস হয়েছে তাতে কতোভাগ শিশু অংশ নিতে পেরেছে? আমাদের দেশ তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সব ঘরে অনলাইন সুবিধা পৌঁছা্য়নি এটা আমাদের প্রথমে মনে রাখতে হবে। যে সকল শিশু অনলাইন ক্লাস করেছে তারা হয়তো এগিয়ে গেলো। কিন্তু যেসকল শিশু এ সুবিধা পায়নি তাদের কি হবে? তারা কিভাবে এ পদ্ধতির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষায় অংশ নিবে? আবার অনলাইনের সুবিধাভোগী সকল শিশুরাই যে অনলাইনের ক্লাসে অংশ নিয়েছে তা আমরা শতভাগ নিশ্চিত করে বলি কিভাবে। আবার অনলাইনের ক্লাস থেকে কতোজন শিশু পাঠ গ্রহন করতে পেরেছে সেটাও আমাদের ভেবে দেখতে হবে।

শিশুরা যাতে ঝড়ে না পরে অথবা পিছিয়ে না পরে সেক্ষেত্রে সরকার নানা উদ্যোগ নিতেই পারেন কিন্তু সকল উদ্যোগের ক্ষেত্রেই সমষ্টিগত চিন্তা করতে হবে। ডিজিটাল পদ্ধতির সুফল আমরা অবশ্যই যেমন সকলে ভোগ করতে চাই তেমনি এর ব্যবহার পদ্ধতি যেন সমাজে বৈষম্যের সৃষ্টি না করে সেদিকেও আমাদের নজর দিতে হবে। শিশুরা কোমলমতি। এরা যাতে তাদের পাঠ গ্রহনের শুরুতেই কোন ধরণের বৈষম্যের শিকার তা নিশ্চিত করতে হবে আমাদেরই।

লেখক:বেলায়েত বাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়ন।