টানা ৮ হারের রেকর্ডকে সঙ্গী করে বিপিএল থেকে বিদায় ঢাকা

:
: ৫ মাস আগে

চারিদিকে বাউন্ডারির ফোয়ারা। ২২ গজে বোলাররা কোথায় বল ফেলবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা। বোলার যে-ই হোক, মাহমুদউল্লাহ কিংবা সৌম্য চার-ছক্কা মারবেন, তা যেন নিয়মিত এক দৃশ্য। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) তাদের ব্যাটিং তাণ্ডবে পুড়লেন দুর্দান্ত ঢাকার বোলাররা।

 

চার-ছক্কার বৃষ্টি নামিয়ে ফরচুন বরিশালের দুই ব্যাটসম্যান বিপিএলে পেলেন ফিফটির স্বাদ। ধ্বংসস্তূপ থেকে দলকে তুলে নিয়ে যান রানের চূড়ায়। যে রান করতে গিয়ে দুর্দান্ত ঢাকা হিমশিম খেয়ে ম্যাচ হেরেছে বিশাল ব্যবধানে।

মিরপুর শের-ই-বাংলায় সৌম্যর ৪৮ বলে ৭৫ ও মাহমুদউল্লাহর ৪৭ বলে ৭৩ রানে ফরচুন বরিশাল ৪ উইকেটে ১৮৯ রান করে। জবাবে ঢাকার ইনিংস ২ বল আগে থেমে যায় ১৪৯ রানে। ৪০ রানের হারে প্রথম দল হিসেবে বিপিএল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিলো ঢাকা। সঙ্গে বিব্রতকর রেকর্ডকেও সঙ্গী করেছে তারা। বিপিএলে ঢাকা ৮ হারের রেকর্ড এখন দুর্দান্ত ঢাকার। এর আগে সিলেট রয়্যালস টানা ৭ ম্যাচ হেরেছিল।

 

নয় ম্যাচে মাত্র ১ জয় ঢাকার। ২ ম্যাচ আগেই শেষ হয়ে গেল তাদের ব্যর্থ মিশন। অন্যদিকে, বরিশাল এক ম্যাচ পর জয়ের স্বাদ পেল। আট ম্যাচে তাদের জয় ৪টি। ৪টি ম্যাচ তারা হেরেছে।

ম্যাচ শেষে বরিশালের মুখে হাসি ফুটলেও শুরুটা ছিল একদম বাজে। টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে বরিশালের অবস্থা ছিল যা-তা! দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে তাদের রান ১৯। অধিনায়ক তামিম (৪), শেহজাদ (১০) ও মুশফিক (১) দ্রুতই ফেরেন ড্রেসিংরুমে। তামিমের উইকেট নেন শরীফুল। ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন। তাসকিনের বাউন্সারে পয়েন্টে ক্যাচ দেন শেহজাদ। প্রায় একই রকম ডেলিভারীতে বল উইকেটে টেনে বোল্ড হন মুশফিক।

 

ভালো দল গড়েও ফল না পাওয়ায় চাপ ছিল বরিশালের ওপর। আজ টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতা তাদের আবার কঠিন পরীক্ষায় ফেলে। কিন্তু, সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে যা করলেন, তা রীতিমতো বিস্ময়কর। ২২ গজে ছক্কার ‘বৃষ্টি’ নামিয়ে রীতিমত দলের স্কোরবোর্ড এলোমেলো করে দেন। ১০ ছক্কা এসেছে তাদের গড়া জুটিতে। জুটিতে ৮৫ বলে আসে ১৩৯ রান। তাতেই বড় পুঁজি পেয়ে যায় বরিশাল।

মাহমুদউল্লাহ ক্রিজে গিয়ে ডাউন দ্য উইকেটে এসে শরীফুলকে ছক্কা উড়ান। পরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে দৃষ্টিনন্দন কাভার ড্রাইভ। সতীর্থর আত্মবিশ্বাসে জ্বালানি পেয়ে যান সৌম্যও। পঞ্চম ওভারে তাসকিনকে দুই চার হাঁকান সৌম্য। পাওয়ার প্লে’ শেষে তাদের রান ৪৬। পরের চার ওভারেও খুব একটা রান আসেনি। ১০ ওভার শেষে বরিশালের রান ৭৯।

এর পরেই পাল্টে যায় বরিশালের স্কোরবোর্ড। পরের ৬ ওভারে ৬৭ রান যোগ করেন দুই ব্যাটসম্যান। এ সময়ে ছক্কা উড়ান উইকেটের চারপাশে। চার মারেন মুগ্ধতা ছড়িয়ে। দুজনের ব্যাটিং তাণ্ডবে মনে হচ্ছিল বরিশালের রান দুইশ পেরিয়ে যাবে। কিন্তু ১৭তম ওভারে শরিফুল মাহমুদউল্লাহকে আটকে দিলে রানের গতি কিছুটা কমে আসে। বাঁহাতি পেসারের শর্ট বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। ৭ চার ও ৪ ছক্কায় মাহমুদউল্লাহ ৭৩ রানের ইনিংসটি খেলেন। ইনিংস শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা সৌম্য ৪ চারের সঙ্গে মারেন ৬ ছক্কা। রান করেছেন ৭৫। তার সঙ্গে অপরাজিত থাকা শোয়েব মালিক ১০ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ১৯ রান।

 

ঢাকার হয়ে শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন ২টি করে উইকেট পেয়েছেন। শরিফুল ৩৬ ও তাসকিন ৩৫ রান দিয়েছেন।

বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪১ রান তুলতে ৩ উইকেট হারায় ঢাকা। সাব্বির হোসেনের পর নাঈম শেখ ও সাইফ হাসান দ্রুত আউট হন। আগের দিন এই দুই ব্যাটসম্যান ফিফটি পেয়েছিলেন। তাদের ব্যাটে আজ তাকিয়ে ছিল দল। কিন্তু, তারা ব্যর্থ হওয়ার পর ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় তারা। দলের হয়ে কেবল লড়াই করেন অ্যালেক্স রস। ৩০ বলে ৫২ রান করেন ৫ চার ও ৩ ছক্কায়। এছাড়া ২৯ বলে ২৮ রান করেন মেহরব। তাদের রান কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমায়।

 

বল হাতে বরিশলের সেরা সাইফ উদ্দিন। ২১ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন ডানহাতি বোলার। ২টি করে উইকেট নেন মিরাজ ও ওবেদ ম্যাকয়।