টানা চতুর্থবার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাজিয়া

লেখক:
প্রকাশ: ৭ মাস আগে

টানা চতুর্থবারের মতো উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হলেন সুলতানা রাজিয়া। তিনি প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুনরায় বিজয়ী হন।

বুধবার (৮ মে) রাতে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শামীম হোসেন। কলস প্রতীকে তিনি মোট ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সোমা চৌধুরী ফুটবল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৭ হাজার ৯৩৮ ভোট। গত ২০১৯ সালে ৪২ হাজার ৪৭৮ ভোট পেয়ে হ্যাট্রিক করেন তিনি।

সুলতানা রাজিয়া একজন সাহসী নারী। তিনি উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তবে নির্বাচনে অংশ নিতে দল থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন তিনি। এলাকায় তিনি ‘পুষ্টি আপা’ নামে পরিচিত।

১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রকল্পে উপজেলার এক ইউনিয়নের সুপারভাইজারের দায়িত্ব পালন করার সময় ব্যাপকভাবে পরিচিত হন ‘পুষ্টি আপা’ নামে।

সুলতানা রাজিয়া বোদা উপজেলার মাড়েয়া প্রধানপাড়া গ্রামের মীর মোহাম্মদ সবারউদ্দিন প্রধানের মেয়ে। ১৯৯৪ সালে এসএসসি পাশের পরের বছরেই তেঁতুলিয়া উপজেলার কালান্দিগছ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদাকাত আলী সরকারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তিনি দুই ছেলে-মেয়ের জননী।

তার বাবা ইউপি সদস্য থাকাকালীন সময়ে জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন তৈরি হয় সুলতানা রাজিয়ার। ২০০৯ সালে পুষ্টি প্রকল্প থেকে পদত্যাগ করে তৃতীয় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন। এরপর চতুর্থ ও পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

সুলতানা রাজিয়া জেলা নারী উন্নয়ন ফোরামের নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সমাজের নানা অসঙ্গতি আর অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের বিপদে-আপদে ছুটে যান। নারীদের বিপদে পাশে থেকে অর্জন করেছেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা। অদম্য সাহসী নারী হওয়ায় নিজেই মোটরসাইকেল চালিয়ে নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটে চলেন উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে। বন্যায়, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে সহায়তা করেন। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোসহ বিচারিক কাজে ছুটে যান বিভিন্ন গ্রামে।

নির্বাচনে বিজয়ের পর সুলতানা রাজিয়া বলেন, এ বিজয়ে আমি সত্যিই ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। উপজেলার মানুষ যে আমাকে এত ভালোবেসে বারবার নির্বাচিত করছেন; জনগণের এ ঋণ শোধ করার মতো নয়। তবে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো এ উপজেলার মানুষ ও নারীদের যে কোনো বিপদ-আপদ ও সামাজিক উন্নয়নে কাজ করার। সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।

প্রসঙ্গত, বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তেঁতুলিয়া উপজেলায় ৩৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়। প্রথম ধাপের নির্বাচনে এ উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।