টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার তিন আসামির

:
: ৭ years ago
গণধর্ষণ

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ‘ল” কলেজের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ওই বাসের চালক হেলপারসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে মধুপুর থানা পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে ওই তরুণী বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাচ্ছিল।

রাতে বনের সড়ক থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করেছিল মধুপুর থানা পুলিশ। শনিবার নিহত তরুণীর পরিচয় না পেয়ে অজ্ঞাত হিসেবে তার লাশ দাফন করা হয়।

তবে সোমবার রাতে মধুপুর থানায় গিয়ে অজ্ঞাতনামা ওই তরুণীর ছবি ও পরনের সালোয়ার কামিজ দেখে শনাক্ত করে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ করে নিহত তরুণীর বড় ভাই হাফিজুর রহমান। সে ঢাকার আইডিয়াল ‘ল” কলেজে এলএলবি বিষয়ে অধ্যায়নরত ছিল।

মধুপুর সার্কেলের সিনিয়ির সহকারি পুলিশ সুপার আলমগীর কবির জানান যায়, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকার বনাঞ্চলের রাস্তার ধারে এক তরুণীর রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকার খবর পায় মধুপুর থানা পুলিশ। ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরত হাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ থানায় নিয়ে আসে।
শারীরিকভাবে নির্যাতনের পর হত্যা করে অপরাধীরা নিরাপদ ভেবে অজ্ঞাত ওই তরুণীর লাশ বনের সড়কে ফেলে রেখে যায় বলে ধারণা করে পুলিশ।

তরুণীর বড় ভাই গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে সোমবার রাতে মধুপুর থানায় উপস্থিত হয়ে লাশের ছবি ও পরনের কাপড় দেখে পরিচয় শনাক্ত করে। পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যদের দেওয়া তথ্যর উপর নির্ভর করে অভিযানে নামে পুলিশ।

নিহত তরুণী বড় ভাই হাফিজুর প্রামানিক জানান, তার ছোট বোন অনার্স শেষ করে ঢাকার আইডিয়াল ‘ল” কলেজে এলএলবি বিষয়ে অধ্যায়নরত ছিল। পাশাপাশি সে শেরপুর জেলায় ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রোমশনাল ডিভিশনে কর্মরত ছিল। গত শুক্রবার শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে সে বগুড়া যায়। পরে পরীক্ষা শেষে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহগামী ছোয়া পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৩৯৬৩) একটি বাসে তার এক সহকর্মীর সাথে যাত্রা করে।
তার সেই সহকর্মীর কর্মস্থল ঢাকায় হওয়ায় সে এলেঙ্গাতে নেমে যায় এবং কিন্তু আমার বোন বাসেই ময়মনসিংহ যাচ্ছিল। কিন্তু সে সঠিক সময়ে ময়মনসিংহ না পৌঁছায় তার সহকর্মীরা মোবাইলে ফোন করলে এক যুবক ফোনটি রিসিভ করে এবং আমার বোন ভুল করে ফোনটি ফেলে রেখে গেছে বলে জানিয়ে কেটে দেয়। এরপর থেকে ফোনটি বন্ধ রয়েছে।

পরে খবর পায় সে পরদিন অফিসেও যায়নি। পরবর্তীতে তার সাথে যোগযোগ করতে না পেরে নিহতের তার বড় ভাই ময়মনসিংহ কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।

মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সফিকুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) নজরুল ইসলাম, অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লাশটি পাওয়ার পর প্রাথমিক সুরত হাল রিপোর্ট দেখেই এটিকে শারীরিক নির্যাতনের পর হত্যা করে ফেলে রাখা হয়েছিল উল্লেখ করে ঘটনার পরদিনই অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এরপর থেকেই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত থাকে। সোমবার রাতে নিহত তরুণীর পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর তার বড় ভাইয়ের দেয়া তথ্যর উপর ভিত্তি করে অভিযান শুরু করে পুলিশ। এর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ওই বাসের চালক হাবিসহ(৩৫) ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত ৫ আসামিকে টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে ৩ জন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।