টাকার জন্য এমন নিষ্ঠুরতা!

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

নরসিংদীর পলাশে জেসমিন বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাদকের টাকার জন্য গরম তেল ঢেলে ওই গৃহবধূর মুখসহ শরীরের প্রায় ৩০ শতাংশ ঝলসে দিয়েছে তার স্বামী।

এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় পলাশ থানায় নির্যাতিত ওই গৃহবধূ  মামলা দায়ের করেছেন। মামলা পর জেসমিনের শাশুড়ি  মিনারা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের দড়িচর পাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত স্বামী মো. মামুন মিয়া ওই গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে। বর্তমানে পলাতক তিনি।

পুলিশ জানায়, পাঁচ বছর আগে মামুন মিয়ার সাথে নরসিংদীর সদর উপজেলার চমপক নগর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর মেয়ে জেসমিনের বিয়ে হয়। মামুন পেশায় অটোরিকশা চালক। বিয়ের কয়েক মাসপর মামুন নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর থেকে মাদক কেনার টাকার জন্য জেসমিনের উপর নির্যাতন চালানো শুরু করে। গত শনিবার রাতে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় চুলায় থাকা রান্না করার গরম তেল জেসমিনের শরীরে ঢেলে দেয়। এতে তার মুখসহ শরীরের ৩০ ভাগ ঝলসে যায়।

নির্যাতিত জেসমিন জানান, মামুন আমাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য প্রায় সময়ই মারধর করত। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অনেকবার বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিয়েছি। ওই রাতে আবারও টাকা চাইলে আমি  অপারগতা জানাই। এতে সে ক্ষুব্ধ হয়ে গরম তেল আমার শরীরে ঢেলে দেয়। এসময় আমার চিৎকারে আশেপাশের মানুষ ছুটে আসে। কিন্তু আমার স্বামী ও শাশুড়ি তখন আমাকে হাসপাতালে না নিয়ে ঘরে বন্দি করে রাখে।

জেসমিনের বাবা মোহাম্মদ আলী জানান, খবর পেয়ে পরের দিন সকালে মেয়ের বাড়ি গিয়ে দেখি জেসমিন অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। মামুন মিয়া প্রায় সময় আমার মেয়েকে মারধর করে টাকার জন্য আমার কাছে পাঠাতো। মেয়ের উপর নির্যাতন বন্ধের জন্য এ পর্যন্ত মামুনকে ধারদেনা করে ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে অনেকবার স্থানীয়ভাবে দেনদরবারও করা হয়। কিন্তু তারা আমার মেয়ের উপর নির্যাতন বন্ধ করেনি।

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান জানান, নির্যাতিত ওই গৃহবধূ থানায় অভিযোগ দায়েরের পর  তার শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। পলাতক মামুন মিয়াকে আটকে অভিযান চলছে।