ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে আগুনে পুড়ে যাওয়া অভিযান-১০ যাচ্ছে মেরামতে

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে আগুনে পুড়ে যাওয়া বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চটি ৯ মাস পরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শনিবার বিকেলে লঞ্চটির মালিক পক্ষ নৌ আদালতের নির্দেশে লঞ্চটি মেরামতের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

জব্দ করার পর থেকে লঞ্চটির জিম্মাদার ঝালকাঠি থানার এসআই নজরুল ইসলাম লঞ্চের মালিক হাম জালাল শেখের কাছে হস্তান্তর করেন। এর পরে সুগন্ধা নদী তীরের ডিসি পার্ক থেকে লঞ্চটি বলগেটের সঙ্গে বেঁধে মেরামতের জন্য নলছিটির দপদপিয়ায় নিজাম শিপিং ডকইয়ার্ডের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশ জানায়, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরগুনাগামী অভিযান ১০ লঞ্চটি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর দিয়াকুল এলাকায় আসলে ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দিলে আগুন লেগে পুড়ে যায়। এতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান লঞ্চের ৪৭ যাত্রী।

এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অর্ধশত মানুষ। এ ঘটনায় ২৮ ডিসেম্বর স্বজনহারা ব্যবসায়ী মনির হোসেন বাদী হয়ে ঝালকাঠি থানায় লঞ্চের মালিক হাম জালাল শেখসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি মামলাটি ঝালকাঠির আদালত থেকে ঢাকা নৌ আদালতে পাঠানো হয়। সেখানেই বিচারাধীন রয়েছে মামলাটি।

এ ঘটনায় লঞ্চের মালিক আটক হলেও জামিনে মুক্তি পান। পরে মালিক পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২৪ জুলাই নৌ আদালত মালিক পক্ষের কাছে লঞ্চটি হস্তান্তরের আদেশ দেন। সেই আদেশের কপি ঝালকাঠি থানায় আসে ২৬ জুলাই। শনিবার লঞ্চের মালিক পক্ষ ঝালকাঠি থানা থেকে কাগজপত্র দেখিয়ে জিম্মায় থাকা লঞ্চটি হস্তান্তর করে নিয়ে যায়।

এদিকে খবর পেয়ে স্থানীয় উৎসুক জনতা সুগন্ধা নদীতীরের ডিসি পার্কে ভিড় করেন। জনতার ভিড় দেখে লঞ্চের মালিক হাম জালাল শেখ সেখান থেকে চলে যান। এর পর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি।

লঞ্চের মালিকদের প্রতিনিধি হিসেবে ডিসি পার্ক থেকে অবমুক্ত করার দায়িত্ব পালন করেন সুন্দরবন-১২ লঞ্চের ঝালকাঠি ঘাট সুপারভাইজার মো. আবু হানিফ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঝালকাঠি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম।

লঞ্চের মালিকদের প্রতিনিধি মো. আবু হানিফ বলেন, অভিযান লঞ্চের মালিক হাম জালাল শেখ শনিবার সকালে ঝালকাঠি আসেন। তিনি থানা পুলিশের কাছে আদালতের কাগজপত্র দেখিয়ে লঞ্চটির জিম্মাদারের কাছ থেকে মুক্ত করেন।

ঘটনাস্থলে লোকজন বেশি থাকায় হাম জালাল শেখ বরিশাল চলে যান। আমি তাদের প্রতিনিধি হিসেবে সহযোগিতা করেছি। লঞ্চটি আপাতত মেরামতের জন্য দপদপিয়া নিজাম শিপিং ডকইয়ার্ডে রাখা হবে। মেরামত শেষ হলে ইঞ্জিন বসিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।

ঝালকাঠি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা নৌ আদালতের নির্দেশনা আমরা গত ২৬ জুলাই হাতে পেয়েছি। লঞ্চটির মালিক পক্ষও আমাদের কাছে কাগজপত্র পাঠিয়েছেন, আমরা সেগুলো যাচাই বাছাই করে দেখেছি। সঠিক প্রক্রিয়ায় লঞ্চটি অবমুক্ত করা হয়েছে। এ সময় লঞ্চের মালিক হাম জালাল শেখের মুচলেকা রেখে দেওয়া হয়েছে।