ঝালকাঠিতে মেয়ে হত্যার বিচার দেখে মরতে চায় বাবা!

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

ঝালকাঠির কলেজ ছাত্রী সুমাইয়া হত্যার প্রায় চার বছর হতে যাচ্ছে , হত্যার স্বীকারোক্তিও দেয় অভিযুক্ত হিমু তারপরও আজও বিচার পায়নি সুমাইয়ার পরিবার।

অভিযুক্তরা জামিনে বের হয়ে বাদীর সামনে শুধু ঘুরছেই না, বাদীর এলকায় এবার কাউন্সিলর প্রার্থীও হয়েছেন হত্যা মামলার আসামী মিল্টন আকন এমনটাই নিহত সুমাইয়ার পিতা আসলাম ফরাজী কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন।

তিনি আরো বলেন, তার মেয়ে সুমাইয়াকে কি ভাবে .কখন কার নির্দেশে হত্যা করে এবং লাশ নিয়ে নাটক সাজানোর বিষয় প্রধান আসামী মাইনুল ইসলাম হিমু নিজ মুখে স্বীকার করেছেন ।

 

থানায় দেওয়া স্বীকারোক্তির পুরো ভিডিও চিত্রও দেখান বাদী। এরপরও মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার পাননি আজও।

 

আসামীরা জামিনে মুক্ত হয়ে প্রতিদিন বাদীর সামনে প্রকাশ্যে বুক ফুলিয়ে ঘুরছে, নির্বাচনও করছে তা সামনেই এ পরিস্থিতিতে বিচার প্রার্থী ওই কলেজ ছাত্রীর হতবগা পিতা বিচার নিয়ে আশংকা করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বার গলা টিপে হত্যা করা হয় কলেজ ছাত্রী সুমাইয়াকে। এঘটনায় ৪ ডিসেম্বার থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়।

মামলা দায়েরের পরপরই অভিুক্ত মাইনুল ইসলাম হিমুকে গ্রেফতার করে পুলিশ । আটকের পরে পুলিশের জিঙ্গাসাবাদে হত্যার স্বীকারোক্তি করে বিস্তারিত বর্ননা দেয় ঘাতক হিমু।

হিমুর দেওয়া স্বীকারোক্তি ভিডিও বক্তব্য সুত্রে জানাগেছে কলেজ ছাত্রী সুমাইয়ার সাথে প্রেম ভালবাসার একপর্যায় হিমু গোপনে বিয়ে করে কিন্তু হিমুর পরিবার বিয়ে মেনে নেননি এনিয়ে হত্যার সুত্রপাত ঘটে।

এবং হিমুর বাবা সুমাইয়াকে ছেড়ে দিতে বলে না হলে সুমাইয়াকে হত্যা করবে বলে হুমকি দেন।

পিতার নির্দেশ ও কি ভাবে সুমাইয়াকে হত্যা করেছে তার পুরো বর্ননা রয়েছে ওই স্বীকারোক্তি ভিডিতে।

এমনকি হত্যার পরে মৃত্যু দেহের মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হিমু নিজেও নাটকিয় বিষ খাওয়ার পরিকল্পনা একে দেন হিমুর পিতা মিল্টন আকন এমন বক্তব্যই রয়েছে ওই ভিডিতে।

এ ঘটনায় মামলা দয়ের করেন নিহত সুমাইয়ার পিতা আসলাম ফরাজী। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার এসআই সরোয়ার হোসেন দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৮ সনের জানুয়ারী মাসের ১ তারিখে পিতা ও পুত্রকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলাটি বর্তমানে ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারধীণ রয়েছে বলে জানান মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবি আব্দুল মান্নান রসুল।

সরকার পক্ষের আইনজীবীর সাথে আলাপকালে তিনি আরো জানান, মামলার সাক্ষী শুরু হয়েছে ইতোমধ্যে বাদীর সাক্ষী আদালতে দিয়েছেন বাকি সাক্ষী পর্যায়ক্রমে হবে বাদীর হতাশ হওয়ার কোন কারন নেই।

আশাকরি বাদী ন্যায় বিচার এ মামলায় পাবে। তবে মামলার বাদী আসলাম ফরাজী দ্রুত বিচার প্রার্থনা করেন ।

তিনি বলেন আমার মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার দেখে মরতে চাই, আমি আর কিছু চাই না।

মামলায় অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামী হিমু নিজেদের মুড়ির মিলে সুমাইয়াকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে আত্মহত্যার নাটক সাজায়।

এ সময় হিমু নিজে বিষ পানের নাটক করে তার আত্মীয়দের মোবাইলে ফোন করে বিষয়টি জানায়। আত্মীয়রা তাদের জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সুমাইয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

হিমুকে পাঠানো হয় বরিশাল হাসপাতালে। পুলিশ রাতে বরিশাল হাসপাতাল থেকে হিমুকে সুস্থ অবস্থায় গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। এরপরেই হত্যার মুল রহস্য প্রকাশ পায়।

হত্যার বিচারের দাবীতে জেলা জুড়ে মানবন্ধনসহ পেষ্টার লাগানো হয় ওই সময়ে। এতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হলে বিচারের দাবীতে ফুসেঁ ওঠে জেলাবাসী ও কলেজ ছাত্রী সুমাইয়ার সহপাটিরা।