ঝালকাঠিতে পাকা ধান কাটতে না পারায় বৃদ্ধ কৃষকের সংবাদ সম্মেলন

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

কৃষি এ দেশের অর্থনীতির এক অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত। বর্তমানে দেশে জিডিপির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অর্জিত হয় কৃষি খাত থেকে। তার চেয়েও বড় কথা কৃষি এ দেশের জনমানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা প্রদানের প্রধানতম এবং অন্যতম উৎস।

এখনও এ দেশের বিপুল জনসংখ্যার কর্মসংস্থানও হয়ে থাকে কৃষিকে অবলম্বন করেই। আর এই কৃষির যোগান দিয়ে থাকেন কৃষক। কৃষকের প্রতিও বাংলাদেশ সরকারের সর্বাত্নক সহযোগীতা রয়েছে। তবে অসহায় এই কৃষকরাই সমাজে নিষ্পেষিত হচ্ছে নানা অপশক্তির হস্তক্ষেপে।

এবার উঠে এসেছে ঝালকাঠির ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধ কৃষকের আবাদি জমি দখলপূর্বক ধান কর্তনে প্রতিবন্ধকতার ঘটনা। এতে ভুক্তভুগী ঐ কৃষক নিজের রোপনকৃত ধান ভোগদখলে ব্যর্থ হয়ে জিম্মি হয়ে পড়েছে অসাধু মহলের কাছে ।

যদিও এ ঘটনায় বৃদ্ধ কৃষক সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোন সুরাহা হয়নি। বরংচ নানাবিধ হয়রানীর শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভুগী কৃষক ।

এ ঘটনায় গতকাল কৃষক মোঃ হাবিবুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নে কালীআন্দার মৌজায় বিভিন্ন খতিয়ান ও দাগের জমি পৈত্রিক ওয়ারিশ ও ক্রয় সুত্রে আমি সহ আমার ভাই-বোন ভোগ দখল করতেছি। পূর্ব পুরুষ হইতে আমরা এই সমস্ত জমির মালিক।

আমাদের এই আবাদি জমিতে ধান রোপন করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করছি। কিন্ত জমি দখলে লিপ্ত হয়ে পড়েছে একটি মহল। এরই ধারাবাহিকতায় এলাকার মৃত জয়নদ্দিনের বড় ছেলে নুরুল ইসলাম আমার জমি দখলের পাঁয়তারায় ও ধান কাটতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ঝালকাঠি সদর থানায় অভিযোগ দিয়ে আমার জমি তাদের বলে দাবী করেন।

এর মদদ দিচ্ছেন তারই ভাই ঢাকার রাজারবাগে গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি বিভাগের ডিটিএস শাখায় ইনস্পেক্টর পদে কর্মরত মাইনুল ইসলাম । তার বড় ভাই নুরুল ইসলামকে দিয়ে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে ক্ষতির সম্মুখিন করে চলেছেন ।

মিথ্যা অভিযোগ দায়েরের পর ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমার জমি থেকে আমাকেই ধান কাটতে নিষেধ করেন । পাশপাশি আমাকে তাঁর কক্ষে দেখা করার আহ্বান জানালে আমি আমার জমির সকল কাগজপত্রাধি নিয়ে তাঁকে দেখালে গত ২১/১২/২১ তারিখে তিনি তাঁর থানার একজন এসআইকে আমার জমিতে প্রেরন করেন ।

সেই এসআই আমার জমির সকল ধান কেটে স্থানীয় মেম্বরকে তাঁর হেফাজতে রাখতে বলেন। এছাড়াও ধান হেফাজত সম্পর্কে লিখিত কোন কাগজ আমি চাইলে তা দিতেও অস্বীকার করেন ।

এদিকে অহেতুক আমার জমিতে জটিলতা তৈরি করায় বর্তমানে ক্ষেতের ধান বিনষ্ট হচ্ছে। এতে আমার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। কেবল মাত্র আমি নই, একই পদ্ধতিতে প্রশাসনকে ব্যবহার করে আমার পার্শ্ববর্তী মৃত রেজ্জেক আলী বেপারীর পুত্র এমদাদুল বেপারীর ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত জমির ধান ঝালকাঠী সদর থানার একজন দারোগা পাঠিয়ে কর্তন করে অন্য একজনের কাছে গচ্ছিত রাখা হয়েছে।

আদালতের মাধ্যমে জমির সত্ব প্রমানে ব্যার্থ হয়ে আদালতের রায়কে বৃদ্ধাংগুলী দেখিয়ে প্রশাসনকে ব্যবহার করে অন্যদের জমি দখলের জন্য সুপরিকল্পিত ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে নুরুল ইসলাম জানান, ঐ জমির মধ্যে আমাদেরও ভাগ আছে ।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি থানার এস আই অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা রউফ জানান, অভিযোগ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। উভয়পক্ষই জমি দাবী করছে। ক্ষেতের ধান বিনষ্ট হওয়ায় স্থানীয় মেম্বারকে নিজ হেফাজতে রাখতে বলার পরও তা অপারগতা স্বীকার করেন।