ঝালকাঠির নলছিটিতে ভাঙারির দোকানে প্রবেশ করে ঘুমন্ত কহিনুর বেগমকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
তার চিৎকারে ধাওয়া করে আরিফুল ইসলাম (১৬) নামে এক কিশোরকে পুলিশে দেন স্থানীয়রা। ওই নারীর ওপর হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়।
অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় আদালতের নির্দেশে তাকে পাঠানো হয় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে। জামিনও হয় তার। কিন্তু বৈধ কোনো অভিভাবকের সন্ধান না পাওয়ায় জামিন হলেও মুক্তি পায়নি ওই কিশোর।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ৮ মার্চ ওই নারীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরদিন ৯ মার্চ কহিনুর বেগমের স্বামী ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. বেল্লাল সরদার বাদী হয়ে ওই কিশোরের বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় মামলা করেন।
আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে ওই কিশোরের সঠিক ঠিকানা ও অভিভাবকের সন্ধান না পাওয়ায় সরকারিভাবে আইনগত সহায়তা পেতে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে আবেদন করা হয়।
এদিকে, কিশোর আরিফুল অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাকে পাঠানো হয় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে। লিগ্যাল এইড প্যানেল আইনজীবী মানিক আচার্য্য মামলাটি পরিচালনা করেন।
৮ আগস্টের জামিন শুনানিতে তার জামিন মঞ্জুর করেন নারী ও শিশু আদালতের বিচারক এমএ হামিদ। জামিনদার না থাকায় প্যানেল আইনজীবীর সহকারী রনিকে জামিনদার করে আদালতে জামিননামা জমা দেন অ্যাডভোকেট মানিক আচার্য্য।
ঝালকাঠি আদালত থেকে জামিন নামা কারাগারে প্রেরণ করলে কারাকর্তৃপক্ষ যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়। জামিন হওয়ার ২৪দিন অতিবাহিত হলেও বৈধ কোন অভিভাবক না পাওয়ায় সেখান থেকে বের হতে পারছে না আরিফুল।
ঝালকাঠি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মো. শিবলী নোমান খান জানান, নলছিটির একটি মামলায় আরিফুল ইসলাম নামে এক কিশোরকে কারাগারে পাঠানো হলেও যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে হস্তান্তর করে কারা কর্তৃপক্ষ।
কেন্দ্রের (বালক) সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন এক পত্রের মাধ্যমে লিগ্যাল এইড সহায়তার আবেদন করেন। তাকে আইনি সহায়তা দিয়ে জামিন করানো হয়। কিন্তু তার সঠিক স্থায়ী ঠিকানা নিশ্চিত হতে না পারায় বৈধ অভিভাবক পাওয়া যাচ্ছে না।
ঝালকাঠির কারাধ্যক্ষ জান্নাত উল ফরহাদ জানান, আরিফুল ইসলাম ভবঘুরে প্রকৃতির হওয়ায় তার কোনো সঠিক ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তবে তার দেওয়া তথ্যে সে ভোলা লালমোহন উপজেলার পাঙ্গাইস্যা গ্রামের মৃত মো. সোহেলের ছেলে বলে জানায়। আমাদের কাছে জামিননামা চলে আসলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছি।
ঝালকাঠি সমাজ সেবা প্রবেশন কর্মকর্তা সানজিদা আয়েশা জানান, যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দি কিশোর আরিফুল ইসলামের জামিন হয়েছে গত ৮ আগস্ট।
জামিনের ২৪ দিন অতিবাহিত হলেও বৈধ অভিভাবক না পাওয়ায় বের হতে পারছে না। নিয়মানুযায়ী তাকে মুক্তি দিয়ে বৈধ অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করতে হয়। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সঠিক ঠিকানা বের করে বৈধ অভিভাবকের হাতে হস্তান্তর করতে।