জ্যাকস-হাওয়েলদের তান্ডবে প্রথমবার দুইশ দেখলো বিপিএল

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের প্রথম ছয়টিই হয়েছে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। সবমিলিয়ে আজকের আগে ১১ বার দুইশ ছাড়ানো দলীয় সংগ্রহ উপহার দিয়েছে সাগরিকার এই স্টেডিয়াম। সেটিকে এবার ১২-তে উন্নীত করলো স্বাগতিক দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

শুরুতে ওপেনার উইল জ্যাকস ও শেষে অলরাউন্ডার বেনি হাওয়েলের সাইক্লোন ইনিংসে এবারের আসরে প্রথমবারের মতো দুইশ ছাড়িয়েছে দলীয় সংগ্রহ। সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০২ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে চট্টগ্রাম। ম্যাচ জিততে সিলেট সানরাইজার্সকে করতে হবে ২০৩ রান।

চলতি আসরের দ্রুততম এবং সবমিলিয়ে বিপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়ে ১৯ বলে ৫২ রান করেছেন জ্যাকস। শেষ দিকে বেনি হাওয়েল খেলেন ২১ বলে ৪১ রানের ইনিংস। এছাড়া ফিনিশিংয়ে দায়িত্বে নেমে দুই ছয়ের মারে ৪ বলে ১৩ রান করেছেন অধিনায়কত্বের ‘চাপমুক্ত’ মেহেদি হাসান মিরাজ।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ঝড় তোলেন চট্টগ্রামের ইংলিশ ওপেনার উইল জ্যাকস। সানজামুল ইসলামের করা প্রথম ওভারে শুধু একটি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। তাসকিন আহমেদের করা পরের ওভারে এক বাউন্ডারির সঙ্গে মারেন ইনিংসের প্রথম ছক্কা। সানজামুলের পরের ওভারে দুই ছক্কার মারে তুলে নেন ১৫ রান।

আগের ম্যাচের মতো আজও তাসকিনকে এক ওভার করিয়েই সরিয়ে নেন সিলেট অধিনায়ক। চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসে জ্যাকসের কাছে তিন বলে তিন চার হজম করেন আলাউদ্দিন বাবু। সেই ওভারেই পূরণ হয়ে যায় চট্টগ্রামের দলীয় পঞ্চাশ। পঞ্চম ওভারে ফের আক্রমণে আসেন তাসকিন।

সেই ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকান জ্যাকস। এরপর বাইরে থেকে আসা ধোঁয়ার কারণে কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে খেলা। পুনরায় শুরু হওয়ার পর প্রথম বলেই চার মেরে ব্যক্তিগত ফিফটি পূরণ করেন জ্যাকস, মাত্র ১৮ বলে। বিপিএল ইতিহাসে এর চেয়ে দ্রুত ফিফটির রেকর্ড রয়েছে শুধুমাত্র আহমেদ শেহজাদের, ১৬ বলে।

তবে ফিফটি পূরণের পরের বলেই সাজঘরের পথ ধরেন জ্যাকস। তাসকিনের বলে স্কুপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে লেন্ডল সিমন্সের হাতে ধরা পড়েন তিনি। আউট ঘওয়ার আগে সাত চার ও তিন ছয়ের মারে মাত্র ১৯ বলে ৫২ রান করেন জ্যাকস। তার তান্ডবে প্রথম পাওয়ার প্লে’তে ৭১ রান পায় চট্টগ্রাম। তবে আরেক ওপেনার কেনার লুইস ১২ বলে করেন মাত্র ৮ রান।

এরপর সাব্বির রহমান ও আফিফ হোসেন ধ্রুবর ওয়ানডে স্টাইলের ব্যাটিংয়ে কিছু কমে আসে রানের গতি। এ দুজন মিলে ৭.৩ ওভারের জুটিতে মাত্র ৪৭ রান যোগ করেন। দলীয় ১১৩ রানের মাথায় ২৯ বলে ৩১ রান করে আউট হন সাব্বির। তার বিদায়ের পর খানিক হাত খোলেন আফিফ।

মুক্তার আলির করা ১৫তম ওভারের পরপর দুই বলে ছক্কা ও চার মারেন তিন নম্বরে নামা আফিফ। পরের ওভারে রবি বোপারার বলেও বিশাল ছক্কা হাঁকান তিনি। তবে পরের বলেই সাজঘরে ফিরে যান ২৮ বলে ৩৮ রানের ইনিংস নিয়ে। এরপর হতাশ করেন দলের নতুন অধিনায়ক নাইম ইসলামও (৭ বলে ৮)।

অধিনায়ক আউট হওয়ার পর শেষ ১০ বলে আরও ৩১ রান করে চট্টগ্রাম। যেখানে দুই ছয়ের মারে ৪ বলে ১৩ রান করেন মিরাজ। আর টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বেনি হাওয়েল দুই চার ও তিন ছয়ের মারে ২১ বলে খেলেন ৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস।

সিলেটের পক্ষে একটি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন, সোহাগ গাজী, মুক্তার আলি, রবি বোপারা ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। নিজের ৪ ওভারে ৫৩ রান খরচ করেছেন তাসকিন, হজম করেছেন ৫টি চার ও ৪টি ছকা।