জেলেদের জালে ধরা পড়ল বিলুপ্ত প্রজাতির কুমির

:
: ৫ years ago

পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের দড়ি ভাউডাঙ্গা গ্রামে পদ্মা নদীতে বিলুপ্ত প্রজাতির একটি মিঠা পানির কুমির ধরা পড়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে জেলেদের জালে কুমিরটি ধরা পড়ে। পরে মঙ্গলবার রাতে রাজশাহী থেকে বন বিভাগের উদ্ধারকারী দল এসে কুমিরটিকে নিয়ে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী এবং এলাকাবাসী জানায়, পাবনার দোগাছী ইউনিয়নের চরকোমরপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে মিঠা পানির বিলুপ্ত প্রজাতির একটি কুমির শনাক্ত করে বন বিভাগ। তবে মঙ্গলবার ধরা পড়া কুমিরটি আগের কুমিরের চেয়ে আকারে ছোট।

ভাঁড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাইদ খান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে দড়ি ভাউডাঙ্গা গ্রামে পদ্মা নদীর কোলে একটি বড় আকারের কুমির দেখতে পায় গ্রামবাসী। আমরা স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার কুমিরটিকে ধরার উদ্যোগ নেই। সারাদিন চেষ্টার পর বিকেলে কুমিরটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগকে জানানো হয়। রাতে রাজশাহী থেকে বন বিভাগের কর্মকর্তারা এসে কুমিরটিকে নিয়ে যায়।

পাবনার জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, স্থানীয়দের নিকট থেকে খবর পেয়ে আমরা বন বিভাগের মাধ্যমে কুমিরটি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিই। বন বিভাগের কর্মীরা উদ্ধার হওয়া কুমিরটির পরিচর্যা করছেন। এটি বিলুপ্ত প্রজাতির কুমির। ঢাকায় নিয়ে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। তবে এটি চরকোমরপুরে দেখা পাওয়া কুমির নয় বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক। চরকোমরপুরে পদ্মা নদীতে আটকে পড়া কুমিরটিকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি।

পাবনা বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ আন্দোলনের আহ্বায়ক এহসান বিশ্বাস লিঠু বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে খাদ্য সংকটে বন্যপ্রাণীরা লোকালয়ে চলে আসছে। আতঙ্কিত হয়ে অনেক সময় স্থানীয় জনগোষ্ঠী এদের হত্যা করে ফেলে। খবর পেয়ে আমরাও ভাঁড়ারা এলাকায় গিয়েছি। তবে এখানকার মানুষ কুমিরটিকে হত্যা না করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। জলজ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এভাবে সবাই সচেতন হলে জীব বৈচিত্র টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।

বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, সামাজিক বন বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা কুমিরটি উদ্ধার করেছি। কুমিরটি প্রায় সাত ফুট লম্বা। এটি স্বাদু পানির বিলুপ্ত প্রজাতির কুমির। বর্তমানে বাংলাদেশে এ প্রজাতির কুমির সচরাচর চোখে পড়ে না।