জেনেভা ক্যাম্পের পাচু স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার, মাদক–অস্ত্র জব্দ

:
: ৬ years ago

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পের অন্যতম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন ওরফে পাচুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকা থেকে জয়নাল ও তাঁর স্ত্রী ফারহানা আক্তার ওরফে পাপিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) স্পেশাল অ্যাকশন টিম। এ সময় ২০ হাজার ইয়াবা বড়ি, আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক জব্দ করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখা থেকে জানা গেছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল রাতে সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন টিম লালবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাচু (২৯) ও তাঁর স্ত্রী ‘মাদকসম্রাজ্ঞী’ হিসেবে পরিচিত পাপিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়।

পরে তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, লালবাগ এলাকার গোপন আস্তানা থেকে জব্দ করা হয় আরও ১০ হাজার ইয়াবা, একটি আগ্নেয়াস্ত্র, পাঁচটি গুলিসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক। পাচু ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়ার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর ও মতিঝিলসহ একাধিক থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে বেশ কিছু মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেনেভা ক্যাম্পের মাদকের প্রধান শীর্ষ ইশতিয়াকের নেতৃত্বে কাজ করেন পাচু। ইশতিয়াকের সেকেন্ড ইন কমান্ড হলেন পঁচিশ আর ম্যানেজার হলেন মোল্লা আরশাদ। তবে ইশতিয়াক বাইরে থেকে ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা করেন। এখন চাহিদা বেশি থাকায় ক্যাম্পে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা। ইশতিয়াক কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান এনে জেনেভা ক্যাম্পে বিক্রি করেন। তবে এখানে হেরোইন, মদ, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ সব ধরনের মাদক পাওয়া যায়। উঠতি বয়স থেকে তরুণ-তরুণী—সবার কাছে এখন ইয়াবার চাহিদা বেশি বলে জানিয়েছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। মাদকের চালান চারটি দলের মধ্যে ভাগ করেন পঁচিশ ও আরশাদ। দল চারটির নেতৃত্বে রয়েছেন পাচু, সাথী, রাজিয়া ও শান্তি। প্রতিটি দলে ১০ থেকে ২০ জন সদস্য রয়েছেন।

ক্যাম্পের বাইরে থেকে আবার পর্যবেক্ষণকারী দল রয়েছে। এসব দলে শিশু সদস্য বেশি। এমনকি থানা, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের সামনেও এদের নজরদারি থাকে। অভিযান চালানোর আগাম খবর দ্রুত ক্যাম্পে জানানোই এই দলের কাজ। এতে সুবিধা হলো, অভিযানের আগাম খবর জানতে পারলে অসংখ্য অলিগলি দিয়ে মাদক বিক্রেতারা সহজেই গা ঢাকা দিতে পারে। আর ধরা পড়লে ঘিরে ফেলা যায় অভিযানকারীদের।

২০১৭ সালের ৩ নভেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, কোস্টগার্ড, এপিবিএন ও এনএসআইয়ের ২০০ সদস্য অভিযান চালিয়ে ইয়াবা, মদ, গাঁজাসহ পাচুর নেতা পঁচিশকে গ্রেপ্তার করে। এর ১২ দিন পর ১৫ নভেম্বর নিম্ন আদালত থেকে চারটি মামলায় জামিন নিয়ে ছাড়া পান পঁচিশ। জেনেভা ক্যাম্পের মাদক ব্যবসায়ীদের প্রধান ইশতিয়াক ও পঁচিশ এরপর থেকে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন।